প্রভো, ‘যুদ্ধ’টা ‘করোনা’র বিরুদ্ধে’ না, ‘ভাইরাস’এর বিরুদ্ধেও’ না, না এইটা ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’ ।

করোনা ‘মহামারি’ হইলো ‘মানুষ’ এর কায়েম করা জুলুমশাহীর বিশেষ প্রতিক্রিয়া, ফল। জ্ঞান, ব্যবস্থা, পদ্ধতি আর কাঠামোগত কারনে যুগে যুগে কত জুলুমি ম্রিত্যু আর ধ্বংস চলতেছে- সেসবকে আমরা কি চিনি-শুনি-দেখি? জ্ঞান করি? ‘করোনা মহামারি’ কি এসবের মধ্যে পড়ে না? এসব প্রশ্ন কি করি আমরা ? ‘যুদ্ধ’টা কি তাইলে? কার ‘বিরুদ্ধে’?

পুরুষতন্ত্র, বর্ণবাদ, পুঁজিবাদ , পরিচয়বাদসহ বহু শোষন- বৈষম্য- নিপীড়ন- জুলুমকারী চর্চা আর প্রতিষ্ঠান আছে ‘মানুষ’এর গড়া- সব মিলায়াই জুলুমশাহী।

পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতা জুলুমশাহীর ইতিহাস, বলা যায়, নতুন রুপ-কাঠামো-মর্ম দিছে।

আমাদের সাধনা হইলোঃ এই জুলুমশাহীর স্বরূপ বোঝা, জুলুমশাহীর বহুমাত্রিক ইতিহাস বোঝা, এর প্রতিষ্ঠান, রীতি-নীতি-ব্যবস্থা বোঝা এবং সেসব থিকা নিজেদের মুক্ত করা।

‘যুদ্ধ’র বহু অর্থ , বহু ইতিহাস, বহু ‘সংস্কৃতি ‘। আমরা যে সাধনার কথা বলতেছি , এই সাধনা ‘যুদ্ধ’ রুপক/নামান্তর দিয়া বুঝা যাবেনা, প্রভো।

শত্রু-মিত্রের যে ভেদজ্ঞান দিয়া যে ‘আধুনিক’ রাজনীতি নির্মিত হইছে- এই সাধনা তার থেকে আলাদা।

হ্যা, আমাদের ‘পুঁজিবাদ – সাম্রাজ্যবাদ- সম্প্রসারনবাদের বিরুদ্ধে লড়তে’ হবে, কিন্তু সেই ‘লড়াইটা’
পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতাবাদী, রাষ্ট্র-সীমানা- ঔপনিবেশিক সার্বভৌমত্ববাদী হইলে আর আমাদের আশা নাই।

এসবের বাইরে, নতুন জীবন- সমাজ-দেশ-দুনিয়া ভাবনা লাগবে আমাদের- যা ভাবগত, জ্ঞানগত এবং ব্যবস্থাগতভাবে এই জুলুমশাহী থেকে আমাদের মুকত হবার ‘বর্তমানে’র সাধনার ভাবনা-অনুশীলন।

এইটা নিজকে , নিজেদেরকে চেনা এবং পরিবর্তোনের সাধনা, ‘বর্তমান’-এ।

সে ভাবনায় জীব-জড়-প্রাণ- প্রকৃতি – মানুষ- সমাজ- দেশ- দুনিয়া-আখেরাত – শত্রু-মিত্র-প্রেম-ভালোবাসা-যত্ন- বন্ধুত্ব- সংহতি – জ্ঞান-বিজ্ঞান — সব আলাদা, অন্যরকম, নতুন।

সেভাবনা পুরুষতন্ত্র, বর্ণবাদ, পুঁজিবাদ , পরিচয়বাদসহ জুলুমশাহীর সব রকম জ্ঞান-রাজনীতি- প্রতিষ্ঠানকে চিনতে, জানতে বুঝতে পারে এবং তা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করার সাধনার মধ্য দিয়াই খোদ নিজেদের জ্ঞান-ভাবনা-অনুশীলনকেও বিচার করে।

অনুমান থিকা বর্তমানে। ‘নতুন আইন’ -এ, প্রভো।

সবাইকে চৈত্রসংক্রান্তি আর বৈশাখের শুভেচ্ছা।

আলেক সাঁই ।