arup raheearup rahee
  • about
  • initiatives
  • resources
  • Special Programs
    • অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা ( mentorship) কার্যক্রম
    • করণ।। Koron ।। সহজ জীবনধারা
    • জীবন জিজ্ঞাসা।। অরূপ রাহী’র সঙ্গে
  • about
  • initiatives
  • resources
  • Special Programs
    • অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা ( mentorship) কার্যক্রম
    • করণ।। Koron ।। সহজ জীবনধারা
    • জীবন জিজ্ঞাসা।। অরূপ রাহী’র সঙ্গে
February 22, 2021
‘যুদ্ধ’র বাইরে, প্রভো! করোনা, জুলুমশাহী ও ঔপনিবেশিকতা
  • Posted By : admin/
  • 0 comments /
  • Under : writings

প্রভো, ‘যুদ্ধ’টা ‘করোনা’র বিরুদ্ধে’ না, ‘ভাইরাস’এর বিরুদ্ধেও’ না, না এইটা ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’ ।

করোনা ‘মহামারি’ হইলো ‘মানুষ’ এর কায়েম করা জুলুমশাহীর বিশেষ প্রতিক্রিয়া, ফল। জ্ঞান, ব্যবস্থা, পদ্ধতি আর কাঠামোগত কারনে যুগে যুগে কত জুলুমি ম্রিত্যু আর ধ্বংস চলতেছে- সেসবকে আমরা কি চিনি-শুনি-দেখি? জ্ঞান করি? ‘করোনা মহামারি’ কি এসবের মধ্যে পড়ে না? এসব প্রশ্ন কি করি আমরা ? ‘যুদ্ধ’টা কি তাইলে? কার ‘বিরুদ্ধে’?

পুরুষতন্ত্র, বর্ণবাদ, পুঁজিবাদ , পরিচয়বাদসহ বহু শোষন- বৈষম্য- নিপীড়ন- জুলুমকারী চর্চা আর প্রতিষ্ঠান আছে ‘মানুষ’এর গড়া- সব মিলায়াই জুলুমশাহী।

পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতা জুলুমশাহীর ইতিহাস, বলা যায়, নতুন রুপ-কাঠামো-মর্ম দিছে।

আমাদের সাধনা হইলোঃ এই জুলুমশাহীর স্বরূপ বোঝা, জুলুমশাহীর বহুমাত্রিক ইতিহাস বোঝা, এর প্রতিষ্ঠান, রীতি-নীতি-ব্যবস্থা বোঝা এবং সেসব থিকা নিজেদের মুক্ত করা।

‘যুদ্ধ’র বহু অর্থ , বহু ইতিহাস, বহু ‘সংস্কৃতি ‘। আমরা যে সাধনার কথা বলতেছি , এই সাধনা ‘যুদ্ধ’ রুপক/নামান্তর দিয়া বুঝা যাবেনা, প্রভো।

শত্রু-মিত্রের যে ভেদজ্ঞান দিয়া যে ‘আধুনিক’ রাজনীতি নির্মিত হইছে- এই সাধনা তার থেকে আলাদা।

হ্যা, আমাদের ‘পুঁজিবাদ – সাম্রাজ্যবাদ- সম্প্রসারনবাদের বিরুদ্ধে লড়তে’ হবে, কিন্তু সেই ‘লড়াইটা’
পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতাবাদী, রাষ্ট্র-সীমানা- ঔপনিবেশিক সার্বভৌমত্ববাদী হইলে আর আমাদের আশা নাই।

এসবের বাইরে, নতুন জীবন- সমাজ-দেশ-দুনিয়া ভাবনা লাগবে আমাদের- যা ভাবগত, জ্ঞানগত এবং ব্যবস্থাগতভাবে এই জুলুমশাহী থেকে আমাদের মুকত হবার ‘বর্তমানে’র সাধনার ভাবনা-অনুশীলন।

এইটা নিজকে , নিজেদেরকে চেনা এবং পরিবর্তোনের সাধনা, ‘বর্তমান’-এ।

সে ভাবনায় জীব-জড়-প্রাণ- প্রকৃতি – মানুষ- সমাজ- দেশ- দুনিয়া-আখেরাত – শত্রু-মিত্র-প্রেম-ভালোবাসা-যত্ন- বন্ধুত্ব- সংহতি – জ্ঞান-বিজ্ঞান — সব আলাদা, অন্যরকম, নতুন।

সেভাবনা পুরুষতন্ত্র, বর্ণবাদ, পুঁজিবাদ , পরিচয়বাদসহ জুলুমশাহীর সব রকম জ্ঞান-রাজনীতি- প্রতিষ্ঠানকে চিনতে, জানতে বুঝতে পারে এবং তা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করার সাধনার মধ্য দিয়াই খোদ নিজেদের জ্ঞান-ভাবনা-অনুশীলনকেও বিচার করে।

অনুমান থিকা বর্তমানে। ‘নতুন আইন’ -এ, প্রভো।

সবাইকে চৈত্রসংক্রান্তি আর বৈশাখের শুভেচ্ছা।

আলেক সাঁই ।


February 22, 2021
আতংকঃ তথ্য, জ্ঞান আর পদ্ধতির রাজনীতি।। করোনাকালে বিউপনিবেশায়ন ভাবনা।। পর্ব ২।
  • Posted By : admin/
  • 0 comments /
  • Under : writings

যা ঘটতেছে তা কি কি অর্থে আতংকিত হবার মত, ‘প্যানিক’ করার মত? ‘প্যানিক’ করার বস্তগত/ কাঠামোগত কারনগুলা কি? কারা কারা কীভাবে এই আতংকের কি কি ভাবে ভুক্তভোগী ? কোন ধরণের তথ্য এবং পরিসংখ্যান ব্যবস্থাপনা ‘প্যানিক’ ছড়ায়, কোন ধরণের তথ্য- পরিসঙ্খ্যান চর্চা ‘প্যানিক’ থেকে সমাজকে বাঁচায় ? রাষ্ট্র, পুঁজিবাদ, তথ্যশিল্প, জ্ঞানবানিজ্য, পরিচয়ফ্যাসিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, বর্ণবাদ – এসব সেখানে কীভাবে ভূমিকা রাখতেছে? এটা তো ঠিক, করোনায় সব দেশে সব সমাজে কম-বেশি আতংক , উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা , ভয়, কাজ করতেছে । উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা , ভয় সৃষ্টি বা নিয়ন্ত্রণ যেমন রাজনৈতিক হওয়া সম্ভব, তেমনি, এসব ‘রোগ’ মহামারি, শোক, উদ্বেগ থেকে মুক্তির জন্যে ন্যায়-ইনসাফি জীবন- সমাজ নির্মানের আলাপ থাকা- না থাকা- করা-না-করা- চাপা দেয়া- জরুরী মনে না করা- সবই রাজনৈতিক। ‘ইনফরমেশন এইজ’-এ জুলুমশাহীর প্রধানতম কাজের একটা, ক্ষেত্র বিশেষে প্রধানতম কাজ ‘তথ্য ব্যবস্থাপনা’। জীবন – মৃত্যুর। শরীর-মনের। ‘স্বাস্থ্য’, ‘রোগ’ ও ‘চিকিৎসার’। প্রাণ-প্রক্রিয়ার। সকল জুলুমশাহীতে বায়োপলিটিক্স বা জৈবনিক রাজনীতির বড় দিক এই তথ্য ও জ্ঞান ব্যবস্থাপনা এবং নজরদারী। করোনা ঘটনাবলী এসবের বাইরে নাই। তাই এই ঘটনাবলী বুঝতে ‘তথ্য’, ‘তথ্য ব্যবস্থাপনা’, ‘বিশ্লেষণ ‘ ‘জ্ঞান’ এবং ‘পদ্ধতি’র রাজনীতি, বিশেষত এসবের পশ্চিমা ঔপনিবেশিক- বর্ণবাদী- পুরুষতান্ত্রিক-পুজিবাদী বিকাশের ইতিহাস, বর্তমান দুনিয়ার প্রভাবশালী ‘ সেক্যুলার’ এবং ‘এন্টি সেক্যুলার’ সব রকম ‘আধুনিকতাবাদী’ কান্ডজ্ঞান এবং বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের উপর এই বিকাশের প্রভাব- এসব বিবেচনায় রাখা দরকার। সেটা এই পোষ্টে বিস্তার করার সুযোগ নাই। যেটা সহজেই লক্ষ্যনীয়, তা হইলো, করোনা/মহামারি নিয়া বাংলাদেশ/দুনিইয়ায় এখন পর্যন্ত যেসব যেসব আলাপ/ বিশ্লেষণ বেশি সামনে আছে এবং সেগুলা যেসব মডেল- এর উপর ভিত্তি করা- সবই এত মডার্নিষ্ট এবং পুঁজিবাদী কান্ডজ্ঞান এবং ‘বিশেষজ্ঞ’ জ্ঞানের , যে, সেগুলা দ্রুতই বিভিন্ন বাইনারীতে গিয়া ঠেকে বা সেওব জ্ঞান দিয়া আলাপ- বিতর্ক বাইনারীতে পৌছায় এবং সে অনুসারে সমাধানের বর্ণবাদী, পুরুষতান্ত্রিক, রাষ্টবাদী, ফ্যাসিস্ট( পুঁজিবাদী, ‘ট্র্যাডিশনালিস্ট’ / পরিচয়বাদী আধুনিক এন্টি সেক্যুলারিস্ট, জাতীয়তাবাদী, উন্নয়নবাদী ) কল্পনা শুরু করে, সেরকম উপায় অনুশীলন শুরু করে। দেখা যাইতেছে এসবের উদাহরণ। নজরদারী বাড়ানো, জাতি-ধর্ম পরিচয়বাদী পুলিশি ব্যবস্থা বাড়ানো , বর্ণবাদী স্বাস্থ্য ভাবনা/ অনুশীলন/ ব্যবস্থা ইত্যাদি করার আলাপ আসতেছে ‘মুলধারা’তেই। ‘করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ । ‘করোনা’র ‘বিরুদ্ধে’ ‘যুদ্ধ’? এসবের বাইরে , সাম্য, ইনসাফ আর মর্যাদার ভিত্তিতে মহামারীসহ বৈশ্বিক সমস্যাগুলার সমাধানের আলাপ একেবারে নাই- তা তো না। অল্প হইলেও আছে। কিন্তু ‘মুলধারা’তে ‘অনুপস্থিত’। আমরা যদি আসলেই এরকম ‘রোগ’ মহামারি, বিনাচিকিতসায় মৃত্যু , অনাহার, বাসস্থানহীনতা, পুরুষতান্ত্রিক জুলুম, ‘মানসিক স্বাস্থ্য’ সংকট, চিন্তা ও মত প্রকাশের বাধা, জলবায়ু পরিবর্তন/ উষ্ণায়ন, খাদ্য দুষন, পরিবেশ দুষনসহ দুনিয়ার বর্তমান সমস্যাগুলি থিকা মুক্তি পাইতে চাই, তাইলে ঐসব ফ্যাসিস্ট/ জুলুমুকারী সমাধানের রাস্তা কল্পনা বাদ দেয়া দরকার। যেসব পদ্ধতি ও মডেলে ঘটনার ব্যাখ্যা কইরা এসব জুলুমুকারী সমাধানে আমরা পৌছাই- সেগুলাকে প্রশ্ন করা দরকার। জরুরী ভিত্তিতে সমাজে ‘তথ্য’র ‘ব্যবস্থাপনা’ এবং ‘বিশ্লেষণে’র এবং সমাধান বিকল্পের বহুমাত্রিক, বহুমাধ্যমের, বহুধরণের , বিউপনিবেশিত গণতান্ত্রিক চর্চা-অনুশীলন দরকার। করোনা ঘটনায় সেটা ভাবার চেষ্টা করতে পারি।


February 22, 2021
‘রাষ্ট্র’ শেষ কথা না ।।করোনার কালে বিউপনিবেশায়ন ভাবনা। পর্ব ১।
  • Posted By : admin/
  • 0 comments /
  • Under : writings

জনতাকে আশ্রয়হীন করা, লাঠিমারা, গুলি করা, শ্রম ও শ্রমের মুল্য থেকে বঞ্চিত করা, পরিহারসম্ভব ‘রোগ’ , ‘শোক’ এবং মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার, জীবনকে সীমিত করার, নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা – সবই ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের ক্ষমতার সীমার মধ্যে । জুলুমশাহী। এমন রাষ্ট্রগুলার সার্বভৌমত্ব চর্চা হয় পারস্পারিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে ‘সীমান্ত’র ‘দুইপাশে”/ বহুপাশের মানুষকেই বলি দিয়া কায়েমী গোষ্ঠীর স্বার্থে, জুলুমশাহীর স্বার্থে।বাংলাদেশের মত পরিচয়বাদী- সঙ্খ্যাগরিষ্ঠতাবাদী- ‘উত্তর-উপনিবেশিক’ ঔপনিবেশিক ক্ষমতা কাঠামো ও ঔপনিবেশিক সম্পর্কজালে আটকে থাকা রাষ্ট্রের সমাজ/জনগণ ঔপনিবেশিক আধুনিকতা আর প্রাক-ঔপনিবেশিক জীবনের ধারাবাহিকতার জটিল দ্বন্দ্ব-মোকাবেলা- সমরুপীকরণ ইত্যাদির ‘মাথানষ্ট’ অবস্থার মধ্য দিয়া যাইতেছি। তার নানা রকম উদাহরণ আমারা প্রতিক্ষনে তোইরী করতেছি, খেয়াল করলে পাইবেন। এহেন অবস্থায় আমাদের প্রথম কাজঃ নিজেদের এই সামাজিক-ঐতিহাসিক মুহুর্তে নিজেদেরকে সম্বিতে রাখা, হুঁশে রাখাঃ ‘আমি কি তাই জানলে সাধন সিদ্ধি হয়’। দ্বিতীয় কাজ এইটা ধ্যানে রাখা যে, রাষ্ট্র বর্তমান, কিন্তু মোক্ষ / চুড়ান্ত লক্ষ্য/ নির্বান/মুক্তি/ শান্তি-আনন্দের দেশ-দশা নয়, বিশেষ ঐতিহাসিক মুহুর্তের সমাজসংস্থানের দশা মাত্র। ঔপনিবেশিক রাষ্ট পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতা( বর্ণবাদ- পুঁজিবাদ – পুরুষতন্ত্র)র সামান্য এক রূপ বিশেষ । এই রাষ্ট্র মডেল অপরিহার্য না । সমাজ- সংস্থানে রাষ্ট্র মডেল শেষ কথা না। এর বাইরে ভাবার এবং করার বহু দিগন্ত রইয়া গেছে । প্রশ্ন হইলো, ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র মডেল তো তবিয়তে বহাল, এখন কি করবো মোরা? উত্তর হইলোঃ প্রথমত, একালের মুক্তি সংগ্রামকে ঔপনিবেশিক আধুনিকতার প্রভাবাধীন সার্বভৌমত্ব মডেল, জাতি/পরিচয়বাদ, লিংগব্যবস্থা, সঙ্খ্যাগরিষ্ঠতাবাদ, সীমান্ত ও রাষ্ট্র মডেল , ক্ষমতার আলম্ব মডেলের বাইরে মানুষ , দ্বীন/ধর্ম/উপাসনা, সমাজ সংস্থান , দেশ , অঞ্চল ও দ্বীন- দুনিয়ার ভাবনা-অনুশীলন করতে হবে।সেসব ভাবনা-অনুশীলনের সাথে বর্তমান ঔপনিবেশিক সার্বভৌমত্ব মডেলের রাষ্ট্রের সম্পর্ক কেবলই রাষ্ট্রকে বিউপনিবেশিক গণতান্ত্রিক সমাজ-প্রক্রিয়ার অধীনে রাখার, সমাজ কল্যানে রাষ্ট্রকে ভূমিকা রাখতে বাধ্য করার এবং সংগ্রাম-সাধনার মাধ্যমে, বিকল্প সমাজ সংস্থান অনুশীলনের মাধ্যমে এই রাষ্ট্র মডেল এবং রাষ্ট্রব্যবস্থার বাইরে দেশ- দুনিয়াকে নিয়ে যাওয়া , সমাজের ইতিহাসে , দুনিয়ার ইতিহাসে ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র ও তার মাধ্যমে চলা জুলুমশাহীকে অতীত করে ফেলা, বর্তমানের জন্যে তাকে প্রভাবহীন করে ফেলা। তার জন্যে সমাজকে , জাত-পাত – শ্রেনী-লিংগ নির্বিশেষে সমাজের সব মানুষকে , সাধক- বিপ্লবী-বুজুর্গানে দ্বীন- আলেম-উলামা- পীর- ফকির-মাশায়েখকে সাম্য-মর্যাদা- ইনসাফের বিউপনিবেশিক , ‘নতুন আইনে’র ভাবনা- অনুশীলনের মাধ্যমে আমাদের নিজেদের এবং বিশ্ব সমাজের ইনসাফি রুপান্তরের কাজ শুরু করতে হবে এখনই।

আলেক সাঁই ।


February 22, 2021
ফতোয়া প্রসঙ্গে
  • Posted By : admin/
  • 0 comments /
  • Under : writings

‘ফতোয়া’ বিষয়ে আমাদের সমাজে ভীতি, সন্দেহ , উৎসাহ ইত্যাদি কাজ করে নানান তরফে। ইসলাম ও শরিয়া- এসবের বহুমাত্রিক বিকাশ ও চর্চার ইতিহাস সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সামাজিক ও গণতান্ত্রিক জ্ঞান চর্চার অভাব, কায়েমি এলিটতন্ত্রের হাতে এ বিষয়ের একক ও প্রশ্নাতীত এজেন্সি থাকা, সেসবের জাহেলি ও বেইনসাফি চর্চা এসবের কারন । এর প্রধান দায় আমাদের, ‘অতনব্বইভাগ’বাদী, জাতিবাদী- পরিচয়বাদী এই সমাজের।’ফতোয়া’ দেয়া কেবল ‘ইফতা’ পড়া বা ‘ইফতা’ ডিগ্রির বিষয় না। আরবী থেকে পাইকারি বাংলা করার ব্যাপার নয়। দ্বীন-দুনিয়া, ইসলাম- শরিয়া, ভাষাতত্ত্ব- অনুবাদতত্ত্ব, সমাজ-ইতিহাস-সংস্ক্রিতি সম্পর্কে ব্যাপক ও গভীর পান্ডিত্যের বিষয়, বহুশাস্ত্রীয় এবং ইনসাফি ইলম আর হিকমার বিষয়।ইউটিউবে গেলে বাংলাদেশ/বাংলাভাষাতেও আপনি বিপুল ফতোয়া চর্চার উদাহরণ পাবেন- বিভিন্ন মাহফিল এবং প্রোগ্রাম থেকে এসব দেয়া হয়। হ্যা, বাংলাদেশেও বহু ভিন্ন মতের ফতোয়া চর্চা আছে, সেটা জীবন বিধান ও দ্বীন চর্চার বিভিন্ন প্রসঙ্গ – অনুসংগেই। কিন্তু সাধারণভাবে সেসবে দুনিয়ার হালনাগাদ তত্ত্ব-দর্শন- সমাজ-ইতিহাস বিদ্যার প্রজ্ঞার সাথে এঙ্গেজ করার উদাহরণ নাই বললেই চলে।ফতোয়া যে কত বিচিত্র রকম হইতে পারে- গুগুল করতে পারেন। দুনিয়ার বদল দুনিয়াবী বহুবিচিত্র অভিজ্ঞতা এবং দ্বীন- ধর্ম-ইসলাম ও শরীয়া সম্পর্কে বুঝ-ব্যাখ্যা বদল হাজারো ফতোয়ার জন্ম দিতেছে। ছবি তোলা -টিভি দেখার হালাল-হারাম, ছবি আকা- গান গাওয়া – ভাস্কর্য বানানি থিকা শুরু কইরা, মেছও্যাক- টুথব্রাশ- স্যান্ডেল- পর্দা- বউ পিটানো- সুদ-ঘুষ-বিবাহ, কুকুর পালা – অনলাইন / টেলিফোনে নিকাহ/বিবাহ, ‘ভিন্নধর্মী’মানুষের সাথে মেলামেশার তরিকা, ‘গণতন্ত্র’ হালাল-হারাম পর্যন্ত। ‘বেদাত’ এর তালিকায় কি ঢুকবে- কি ঢুকবেনা- ফতোয়া আছে অগনিত। প্রতিদিন আসতেছে।মুমিন-মুসল্মানের ভিন্নমতে আল্লাহর নিয়ামত বর্ষিত হবার সম্ভাবনা। শর্তঃ ইলম/জ্ঞান/প্রজ্ঞার চর্চা। তাই, মুসলিমদের মধ্যে, সমাজের যেকোনো মত-পথ-বিশ্বাসী কমিউনিটির মতই, ভিন্নমত থাকলে, কোনো বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন ফতোয়া আসলে সেটা সমাজে সামাজিক/ গণতান্ত্রিক/ সম্মিলিত ভাবে জ্ঞান- প্রজ্ঞার চর্চায় দিয়া সেসবের মীমাংসা/ব্যবস্থাপনা্র বিষয়। কেন্দ্রীয় কর্ত্রিপক্ষ অনেকেই চান এসব মীমাংসার জন্যে। তার ফল দুনিয়ায় কেমন কেমন হয় বা হইছে- আগ্রহীরা খবর নিতে পারেন। ‘গণতন্ত্র’ হারাম / কুফরি/হালাল ইত্যাদি ফতোয়া পাবেন। সারা দুনিয়াতেই বহু জন এই ফতোয়া দিতেছেন বহু যুগ ধইরা। উলটা ফতোয়াও আছে, ভিন্ন ভিন্ন মতের অনেক ফতোয়া আছে রাষ্ট,গণতন্ত্র, ভোট ইত্যাদি সম্পর্কে। সেসবের অনেক ফতোয়া বিপুল পান্ডিত্যপুর্ণ, বহুশাস্ত্রীয় জ্ঞান চর্চর ও প্রজ্ঞার প্রতিফলন আছে অনেকের ফতোয়ায়।যাই হোক। এই যে একই প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন ফতোয়া- এটা কেমনে সম্ভব হয়, হইলে কে কোন ফতোয়া মানবে বা মানবেনা- এসবের ‘আইনগত ‘ বাধ্যবাধকতা কি- এসব প্রশ্ন আমাদের আমমধ্যবিত্তের আছে।ফতোয়া কোনো বিষয়ে ‘ধর্মীয়বিধানগত’ বিবেচনা থেকে দেয়া একক বা গোষ্ঠীগত/ সম্মিলিত রায়/নির্দেশনা/মতামত বা রুলিং। সবক্ষেত্রে তা বিশ্বাসী’র মানা-না-মানার অব্লিগেটরি/ বাধ্যবাধকতাযুক্ত না, বরং ভিন্ন ভিন্ন বিধান / ব্যাখ্যা/ অনুশীলনের দল বা মাজহাব বা সম্প্রদায় ইত্যাদির নিজস্ব স্বাধীনতার ব্যাপার ।ধর্মীয় বিধি-বিধানের বুঝ-ব্যাখায় ভিন্নতা ও বৈচিত্রই একই প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন ফতোয়ার উতস। কোনো ফতোয়া ‘রাষ্ট্রীয় আইন’ আকারে জারি না হইলে তা মানার ‘আইনী বাধ্যবাধকতা’ সাধারণভাবে কোনো রাষ্ট্রে বিশ্বাসীদের নাই। এটা ফতোয়ার একটা প্রধান আইনগত পরিসীমা। ‘ধর্মীয় চর্চা’ হিসেবে ফতোয়া দেয়া-নেয়া, মানা-না- মানা সব সময় ইসলাম ও শরিয়ার বুঝ-ব্যাখ্যা-ভাষ্য- অনুশীলনের দল, মাজহাব, ধারা-উপধারা ইত্যাদির নির্ভর করে আসছে। ‘রাষ্ট্র’ যতক্ষন একটা বহুজাতি-বহুধর্ম-বহুভাষার- বহু পরিচয়ের, বহুমতের মানূষের সমাজের ‘গণতান্ত্রিক’ তথা, অংশগ্রহণ্মুলক, প্রতিনিধিত্বমুলক, দায়বদ্ধতার অধীন, ‘ধর্মীয়’ রুলিং বা ফতোয়া জারি করা , কায়েম করা তার এক্তিয়ার/কর্তব্যের মধ্যে পরে কিনা- তাও শরিয়া ও ফিকহ শাস্ত্রবেত্তাদের বিপুল বিতর্ক-বাহাসের বিষয়, যার সর্ববাদীসম্মত কোনো মীমাংসা হয় নাই এখনো। ‘ফতোয়া’ তাই বিশ্বাসীর ব্যক্তিগত ও কমিউনিটি’ পরিসীমার নানামাত্রায় মানা-না-মানার বিষয় হিসেবেই থাকে এমন ক্ষেত্রে। ‘ ‘ইসলামী রাষ্ট্র’ ধারণাটাই ঔপনিবেশিকতা প্রভাবিত- এমন মতের পক্ষে শক্তিশালী যুক্তি-আলোচনা আছে। এই ধর্ম-রাষ্ট্র সম্পর্কটা ‘সেক্যুলারিজম’ বিতর্কের একটা অংশ। এ বিষয়ে রসদ পাবেন ‘লোকায়ত’ সাইটে। লিঙ্ক পাবেন মন্তব্যের ঘরে।ছবি-মুর্তি-ভাস্কর্য বিষয়ে ফতোয়া দিতে আগ্রহীদের জন্যে কিছু রসদ যোগাড় করছি, তারও লিঙ্ক আছে মন্তব্যের ঘরে। ২/দ্বীন-ধর্ম-ইসলাম- শরীয়া বুঝের বহুভিন্নতা আছে সারা দুনিয়ায়। থাকাটাই স্বাভাবিক। একটা প্রধান চ্যালেঞ্জ হইলোঃ ঔপনিবেশিক আধুনিকতা মোকাবেলা। সেখানে জটিলতা হইলোঃ ঔপনিবেশিক আধুনিকতার প্রভাবের বাইরে গিয়া কিভাবে নিজেদের এসব বোঝাপড়ার পর্যালোচনা করা যায়। শরিয়া সম্পর্কে পরিচয় ও পর্যালোচনামুলক পাঠের তালিকার লিঙ্ক পাবেন মন্তব্যের ঘরে। তো, ঔপনিবেশিক আধুনিকতা যে পরিচয়বাদ/সঙ্খ্যাগরিষ্ঠতাবাদ/পুজিবাদ/ লিংগব্যবস্থা/জ্ঞানব্যবস্থা/আধুনিক রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রপ্রকল্প তৈরীতে নির্ধারক ভূমিকা রাখলো- এসব ব্যবস্থা/চর্চা/আদর্শ/প্রকল্প/প্রতিষ্ঠানের বাইরে আমরা কিভাবে নিজেদের দ্বীনী বুঝ হাজির করবো/নির্মান করবো- যা দেশ- দুনিয়ায় শান্তি, মঙ্গল, ন্যায়-ইনসাফ আনতে ভূমিকা রাখবে, সেটা খুবি জটিল এবং কঠিন , বহুমাত্রিক সাধনারই ব্যাপার।উপনিবেশ/সাম্রাজ্যবাদ আমাদের মজলুম করছে, প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক, কিন্তু প্রতিক্রিয়াই শেষ কথা এবং ‘স্বাভাবিক’ হইলে আমরা জালিম হয়ে উঠি, কারন, প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক হয়্ব ওঠার সাথে একটা নতুন ক্ষমতা পত্তন হইতে থাকে। যার সুবিধা সমাজে কায়েমী হইতে থাকে।এসব থিকা বের হওয়া কঠিন। কিন্তু জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা, ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠার সাধনা করা- জ্ঞান/প্রজ্ঞা/জীবন চর্চার সবখানে, খুব কঠিন।”ওয়য়ার অন টেরর’ মডেল চলতে পারতেছে যে এখনো, ‘ সেক্যুলার’- ‘এন্টি -সেক্যুলার’ জোড়-বিপরীতের বিজনেস যে চলতে পারতেছে- তার প্রধান একটা কারন আমাদের, দুনিয়ায় এই জ্ঞানগত/ ভাবগত/ সাংস্কৃতিক / রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা।আমরা জ্ঞাতসারে/অজ্ঞাতসারে এই মডেল এবং জোড়-বিপরীত ব্যবহার করে চালু থাকা জুলুমশাহীর নাটবল্টু/চালক/পরিচালক ভূমিকা পালন করতেছি।’উন্নয়ন’, ‘চেতনা’ আর ‘অনুভুতি’ ব্যবহার, উপঢৌকন -নজরানা – জালিমি ক্ষমতার লেনদেন-ভাগাভাগি দিয়া চলা এই জুলুমশাহীঃ গুম-খুন-ভোটডাকাতি-বিচারহীনতা-ধর্ষনতন্ত্র- পুঁজিবাদ – পুরুষতনত্র- গায়ের জোরবাদ/ সঙ্খ্যাগরিষ্ঠতাবাদ- পরিচয়ফ্যাসিবাদ – সেখানেও আমরা অনেকেই কায়েমীর পক্ষে ভূমিকা রাখি, প্রতিবাদ করিনা। এসবের বিরুদ্ধে গভীর পান্ডিত্যপুর্ণ একক, বহুজনের বা সম্মিলিত ‘ফতোয়া’ পাই না যে, এসব থিকা আমাদের সমাজে ‘দ্বীনী ইলম চর্চা’র হাল- হকিকত ও কায়েমী অবস্থা/ চর্চার হাল-পক্ষ কিছুটা আন্দাজ করতে পারি। জুলুমশাহীর দেশে সঙ্খ্যাগরিষ্ঠতার সুবিধা-ক্ষমতাপ্রাপ্ত সমাজের দ্বীন চর্চার দায়-দায়িত্ব অনেক বড়। পদে পদে তার ন্যায়- ইনসাফ চর্চার চ্যালেঞ্জ। সাম্য-ন্যায়-ইনসাফের জন্যে লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ। হক্কুল্লাহ- হক্কুল ইবাদ বোঝা ও চর্চার চ্যালেঞ্জ।তাই সেদিন বলছিলাম যে, পারলে ভাষামুর্তি ভাংগো, ভাষাপ্রতিমার বাইরে যাও, ধর্মবুঝের ঔপনিবেশিক-পরিচয়বাদী-কেন্দ্রবাদী ভাস্কর্য ভাংগো। এই ব্যাপারটা বুঝলে জুলুমশাহির বিরুদ্ধে, গুম-খুন- ধর্ষন-লুটপাট-ভোটডাকাতির বিরুদ্ধে, ধর্ষনতন্ত্র- পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে, সাম্য-ইনসাফ-গণতন্ত্রের পক্ষে লড়া্র দ্বীনী দায়িত্ব বোঝা যায়।জুলুমশাহী থিকা মুক্তি পাইতে আমাদের ইনসাফি ইলম চর্চার, তার সামাজিক অনুশীলন গভীর করার তৌফিক দিন- পরম করুনাময়ের কাছে এই নিবেদন।


February 22, 2021
সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদ আর পরিচয়ফ্যাসিবাদ প্রসঙ্গে স্ট্যাটাস সংকলন
  • Posted By : admin/
  • 0 comments /
  • Under : writings

[ এখানে বিভিন্ন সময়ের স্ট্যাটাস যুক্ত হতে থাকবে। এই নোট শেয়ার করার জন্যে ছোট লিঙ্কঃ https://bit.ly/2FIXRUM]

১/

পরিচয়ফ্যাসিস্ট কারা?

এমন সব মানুষজন, যারা ‘দেশ’, ‘জাতি’র ‘প্রেমে’ অস্থির, আত্মপরিচয়জ্ঞান যাদের জবরদস্তিমূলক আত্মাভিমানে পৌছাইছে, যারা নিজেদেরকে জগতের ‘শ্রেষ্ঠ’ এবং ‘মনোনীত’ বিবেচনা করতেছেন, এই অলীক শ্রেষ্ঠত্বের অভিমানে অন্যের উপর এবং নিজ পরিচয়রাজনীতির কারনেই সৃষ্ট নিজ পরিচয়গোষ্ঠীর প্রান্তিক মানুষদের উপর জুলুম করতেছেন নিজেদের রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রপ্রকল্প বা অন্যান্য সামাজিক মেশিন দিয়া। এনারা পরিচয়রাজনীতির সংকট নিয়া আলাপ করতেছেন না, পর্যালোচনা করতেছেন না পরিচয়ের আপতিকতা, বর্তমানতা ও পরিবর্তনশীলতার , পরিচয়বাদ/ জাতীয়তাবাদ/ জাতিরাষ্ট্র – সীমানা মডেলের, খুঁজে পাইতেছেননা পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতার ভূমিকা, পুঁজিবাদের ভূমিকা, আলাপ করতেছেন না নিজেদের চিন্তা- জ্ঞান- কল্পনা- আকাঙ্ক্ষার ওপর পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতার ভূমিকা ও আধিপত্য নিয়্যা।

‘সেক্যুলার’/ ‘এন্টি’/’পোষ্ট’/ ‘নন- সেক্যুলার’ নির্বিশেষে এই ‘দেশ’/’জাতি’ প্রেমিকরা সবাই পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতা, তার পুঁজিবাদ ও রাষ্ট্রধারণার ছায়ায় বেড়ে ওঠা সম্প্রদায়বাদী, শতাংশের বড়াইবাদী, ব্রাহ্মণ্য আর আশ্রাফত্ববাদী, সমরুপতাবাদী, কেন্দ্রবাদী, আধিপত্যবাদী, জাতীয়তাবাদী/ জাতি ও অন্যান্য পরিচয়ভিত্তিক রাষ্ট্রবাদী/ সীমানাবাদী, উন্নয়ন আর পুঁজিবাদী তো বটেই।

এই কাঠামোগুলার বাইরে কাউরে এখনো পাইলাম না উনাদের মধ্যে।
এনারা ‘মানুষ’ আর ‘সমাজ’কে, ‘দেশ’কে ‘ভালোবেসেই’ ফ্যাসিস্ট পরিচয় রাজনীতি নিয়া হাজির।

‘ভালোবাসা’ যে জুলুম আর ফ্যাসিবাদের রুপ নিতে পারে- তা ভাবার সময় এনাদের ‘ভালোবাসা’র সময়ে কই? গভীরভাবে পুরুষতান্ত্রিক এই ভালোবাসাই কালে কালে ফ্যাসিস্টরা বেসে আসতেছে।

ঔপনিবেশিক আধুনিকতা, তার পুঁজিবাদ ও রাষ্ট্রধারণার ছায়ায় বেড়ে ওঠা সম্প্রদায়বাদী, শতাংশের বড়াইবাদী, ব্রাহ্মণ্য আর আশ্রাফত্ববাদী, সমরুপতাবাদী, কেন্দ্রবাদী, আধিপত্যবাদী, জাতীয়তাবাদী/ জাতি ও অন্যান্য পরিচয়ভিত্তিক রাষ্ট্রবাদী/ সীমানাবাদী, উন্নয়ন আর পুঁজিবাদী চোখে দুনিয়া দেখা আর সমাজ-দেশ নিয়া ভাবার বাইরে, ‘দেশ’ এবং ‘জাতি’কে ভালোবাসার, দুনিয়ায় অধিকার, সাম্য, মর্যাদা আর ইনসাফের চর্চার আর কোনো ভাব, পদ্ধতি, উপায় সম্পর্কে এদের জানা-বোঝার আগ্রহ, ইচ্ছা, খেয়াল, দরকারবোধ- কিছুই নাই।

এদের এই প্রেম আর ভালোবাসা থিকা, খোদা, রক্ষা করো!

#ডেংগি #ডেঙ্গু #জুলুমশাহী #আইয়ামেজাহেলিয়া #জাতীয় #ফ্যাসিবাদ

SUNDAY, AUGUST 4, 2019·https://www.facebook.com/notes/arup-rahee/%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9A%E0%A7%9F%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE/2289447371109664/

২/

‘আপনি সংখ্যাগরিষ্ঠ। আপনি কোনোকালে কারো দ্বারা ‘ভিক্টিম’, তাই চিরকালের ‘ভিক্টিম’। আপনার কোনো ভুল নাই। অপরাধ নাই। থাকতে পারে না, হয় না। আপনি নিষ্পাপ।চিরকালের মাসুম।

আপ্নে জ্ঞান-বুদ্ধি-বিবেচনার চূড়ান্ত অথরিটি। বহু ‘দলিল’ অনেককেই এমন অথরিটি দেয়। কিন্তু আপ্নিই কেবল অথরিটি। কারন আপনি ব্যাটা। ঘাড়ের রগ ফুলানো ব্যাটাগিরি আপনার ।

যিনি আপনাকে মনোনীত করছেন বইলা আপনি দাবী করেন, তার রক্তমাংসের শরীর নাই, কাদামাটির মুর্তিও নাই ভাঙ্গার, ধরাছোঁয়ার বাইরে তিনি, কিন্তু আপনি তাঁর প্রতিনিধি। আপনি তার বাহক ও বার্তা, আপ্নিই সে বার্তার ভাষ্যকার, ব্যাখ্যাকর্তা, চাপানোর মালিক, কারন, আপ্নিই তো শ্রেষ্ঠ , মনোনীত। আপনিও জায়নবাদী, কিন্তু সেটা আপনি অন্যকেই ডাকেন।

আপনার জ্ঞান-বিবেচনা-বুদ্ধি-আচরন জুলুমশাহীর ভিত্তি হইতে পারে- সেটা আপনার কল্পনারও বাইরে। আপনি জেনে-না-জেনে জালিম হইতে পারেন- হয়া আছেন- সেটাও আপনার কল্পনারও বাইরে।

আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।’

https://www.facebook.com/arup.rahee/posts/10157815593081563

‘কোনো একটা ধর্ম/জাতি/ভাষা/গাত্রবর্ণ/লিংগ/যৌন পরিচয়ে আপনি অটোমেটিক্যালি ভালো, ইমানদার, ইনসাফকারী, জালিম বা মজলুম- এমন না। একই ধর্ম/জাতি/ভাষা/গাত্রবর্ণ ইত্যাদি পরিচয়ে আপনি জালিমও হইতে পারেন, মজলুমও হইতে পারেন। ফলে, কোথায় কীভাবে আপনি জালিম বা মজলুম হয়ে ওঠেন, সেটা সবসময়ে খেয়াল করে, হুঁশিয়ার থেকে, সকলে মিলে সকলের জন্যে মুক্তি, মর্যাদা আর ইনসাফের সমাজ- রাষ্ট্রের কথা আপনাকে ভাবতে হবে। গলার রগ ফুলানো সঙ্খ্যাগরিষ্ঠতাবাদ আর পরিচয়ফ্যাসিবাদীব্যাটাগিরি দিয়ে ধর্ম-ইবাদত- ইনসাফ কিছুই হয় না।’

https://www.facebook.com/arup.rahee/posts/10157839887096563

সংখ্যাগরিষ্ঠতার অন্যায় জোর আপ্নের বিচার, বুদ্ধি, বিবেচনা, ইনসাফবোধ, জ্ঞান-প্রজ্ঞা- সব নাই কইরা দিতেছে; কিন্তু আপ্নে নিজেরে নৈতিকতার , ঈমানের, কুফরির, ইনসাফের ব্যাপারে চুড়ান্ত অথরিটি/ভাষ্যকার/বিধানদাতা হিসেবে ব্যাটাগিরি ফলাইতেছেন, হে জাহেল-জালিম পরিচয়ফ্যাসিস্ট!

পরমকরুনাময়ের কাছে আপনার জন্যে এবং আমার জন্যে হেদায়েত প্রার্থনা করি। আমিন।

https://www.facebook.com/arup.rahee/posts/10157861543026563

‘কটুক্তি’র সংগা নির্দিষ্ঠ করা যেমন সম্ভব না অনেক ক্ষেত্রেই, তেমনি, এটা জরুরী হয়ে দেখা দেয় না সব ক্ষেত্রে , বরং কোনটা কটুক্তি , কার ‘কটুক্তি’ ‘কটুক্তি’ আর কারটা না- পরিস্থিতি আর গায়ের জোর দিয়া ঠিক হয়।

#পরিচয়ফ্যাসিবাদ নিপাত যাক #সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদীফ্যাসিবাদীজুলুম নিপাত যাক #জুলুমশাহীনিপাতযাক #ভাগেরবড়াইবাদীজুলুমনিপাতযাক

https://www.facebook.com/arup.rahee/posts/10158087060866563

কতভাগের দেশে কতভাগের কি হবে- এইটা কোন কোন কিতাবে কি কি ভাবে বলা আছে, সেসব কিতাবের ব্যাখ্যা-ভাষ্য কারা মীমাংসা কইরা দিবে, তাদের অথরিটির মীমাংসা কি দিয়া হবে, ব্যাখ্যা-ভাষ্যের জ্ঞানতাত্বিক-দার্শনিক- সাংস্কৃতিক পার্থক্য আর ভিন্নতার মীমাংসা কি দিয়া হবে রে জায়নবাদী শয়তানের দল- পরিচয়ফ্যাসিস্টের দল- পরিচয়সঙ্খ্যাগরিষ্ঠতাবাদীজালিমের দল? গায়ের জোর দিয়া? নাকি ইলম আর ইনসাফের , জ্ঞান আর ন্যায্যতার বিউপনিবেশিত, দেশসমস্যাভিত্তিক বিবেক-বিচার দিয়া?

https://www.facebook.com/arup.rahee/posts/10158087144186563

#

‘আন-এপোলজিটিক’ ?

এমন মানুষের রুপ-সুরত-জীবন-যাপন কেমন- যখন তা দ্বীন-ধর্ম-রিলিজিয়ন-জাতির পরিচয়বাদী -জায়নবাদী-পুরুষতান্ত্রিক- ফ্যাসিস্ট রাজনীতির সাথে যুক্ত প্রশ্ন?

ধরা যাকঃ সবাই ‘আন-এপোলজিটিক ‘দ্বীনি’/’ধার্মিক’/’রিলিজিয়াস’ হইলো( এসব বলতে কি বুঝায়? তাদের ইলম আর ইনসাফের রুপ/অনুশীলন কি হবে?) , তারপরও কি অতভাগ অমুকের ‘দেশে’ কতভাগ তমুক কিভাবে-না থাকবে-এইসব আলাপ চলতে থাকবে? কিভাবে থাকবে? ‘আন-এপোলজিটিক’রা কি সবার যার যার ‘পরিচয়’ ‘রাষ্ট’ নিয়া একে অন্যের বিরুদ্ধে ‘জিহাদ’ আর ‘ধর্মযুদ্ধ’ করতে থাকবে কাল ‘কিয়ামত’ পর্যন্ত? না কি আন এপলজিকরা দ্বীন-ধর্ম-জাতি-পরিচয়ের ইনসাফভিত্তিক, সাম্যভিত্তিক নতুন ধ্যান-ধারণা হাজির করার বহু রকম মানুষ?

মজুলুমের আরো প্রশ্নঃ কতভাগের দেশে কতভাগের কি হবে- এইটা কোন কোন কিতাবে কি কি ভাবে বলা আছে, সেসব কিতাবের ব্যাখ্যা-ভাষ্য কারা মীমাংসা কইরা দিবে, তাদের অথরিটির মীমাংসা কি দিয়া হবে, ব্যাখ্যা-ভাষ্যের জ্ঞানতাত্বিক-দার্শনিক- সাংস্কৃতিক পার্থক্য আর ভিন্নতার মীমাংসা কি দিয়া হবে রে জায়নবাদী শয়তানের দল- পরিচয়ফ্যাসিস্টের দল- পরিচয়সঙ্খ্যাগরিষ্ঠতাবাদীজালিমের দল? গায়ের জোর দিয়া? নাকি ইলম আর ইনসাফের , জ্ঞান আর ন্যায্যতার বিউপনিবেশিত, দেশসমস্যাভিত্তিক বিবেক-বিচার দিয়া?
নাকি বহুত্বের মধ্যে ঐক্যের গ্রহণযোগ্য/ইনসাফভিত্তিক নানান মডেল অনুশীলন কইর্যা যাইতে হবে আমাদের, আল্লাহর ওয়াস্তে, পরমকরুনাময়ের নামে, পরমের নামে ? ‍

দেশ-সমাজ-রাষ্ট্র- ভূগোল ও জ্ঞানের সীমানা- দ্বীন-ধর্ম-রিলিজিয়নের
বিউপনিবেশিক পর্যালোচনা কইর্যা , নতুন জ্ঞান-ভাব-সাধনার ভিত্তিতে দুনিয়ায় দেশ-সমস্যাভিত্তিক নতুন জীবনব্যবস্থার ‍চর্চা ছাড়া ‘শান্তি’ আর ‘ইনসাফ’ কিভাবে সম্ভব?

https://www.facebook.com/arup.rahee/posts/10158087298401563

পরিচয়ফ্যাসিবাদের অ আ ক খ

প্রশ্নঃ বাংলাদেশ কি বহুজাতি-বহুধর্মের- বহুভাষার-বহু সংস্কৃতির দেশ?

‘বাংগালী’ জাতীয়তাবাদীঃ না! বাংলাভাষা, বাংগালী জাতি আর ‘বাঙ্গালী সংস্ক্রিতি’র দেশ!

‘বাংলাদেশী’ জাতীয়তাবাদীঃ এই সীমা/রাষ্ট্রের মধ্যেকার অতভাগ…

‘৯৮ভাগ’বাদীঃ না! ‘৯৮ ভাগ’ অমুকের দেশ! ৯৮ ভাগ অমুকের ভাষা- সংস্ক্রিতির দেশ!


February 22, 2021
পরিচয়ফ্যাসিবাদ ও জুলুমশাহীর বাংলাদেশঃ শরীয়ত সরকার গ্রেফতারের কালে কয়েকটা মন্তব্য
  • Posted By : admin/
  • 0 comments /
  • Under : writings

[ সম্পাদনা চলবে]

‘কটুক্তি’, ‘অবমাননা’র মত অনির্দিষ্ঠ, অসংগায়িত ‘অপরাধে’র অভিযোগে এত দ্রুত শরীয়ত সরকার এবং আরো অনেকের গ্রেফতার-রিমান্ডের সাথে বাংলাদেশে আরো একটা -দুইটা রাজনৈতিক – পরিচয় রাজনীতির সংগে যুক্ত মানূষদের গ্রেফতার-রিমান্ড-গুমের এত মিল আর ভোট-ডাকাতি, ধর্ষন , টাকা-পাচার, ব্যাংক লুট, নদী-বন-পাহাড়-বাতাস-জমি ধ্বংসের হোতাদের এত আরাম আর এত জুলুমকারি ক্ষমতার ভোগ-উপভোগ– কোথাও আমাদের ইমান-এহসান- জ্ঞান-প্রজ্ঞা-ইনসাফের বোধ ধাক্কা খায়?

শরিয়ত বয়াতির মুক্তি চাই আমরা, কিন্তু এটা যথেষ্ট না। ভিন্নমত- ভিন্ন রুচি পোষনের অধিকার, ভোট, শ্রমের মুল্য পাবার অধিকার, দূষণ – অমর্যাদা-বিচারহীনতামুক্ত সমাজ-জীবন নির্মানের সংগ্রামটা আমাদের হয়ে অন্য কেউ কি করে দিবে?

এহ বাহ্য।
#
জুলুমশাহী যে নামেই চলুক- তা নিজে ফ্যাসিস্ট এবং অন্যসব রকম ফ্যাসিস্ট প্রবণতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদদাতা, জমিন তৈরীকারী। বাংলাদেশের সমাজে ফ্যাসিবাদী প্রবনতার কয়েকটা রূপ আছে মিলেমিশে। এখানে তার একটা রুপ-ধরণ যা বেশ প্রত্যক্ষগোচর, তা হইলো #পরিচয়ফ্যাসিবাদ যা জাতি-ধর্ম পরিচয়ের মানুষের #সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদীফ্যাসিবাদীজুলুম , #ভাগেরবড়াইবাদীজুলুম । এসব নিয়া আমার মত-মন্তব্যের একটা সংগ্রহ এখানে পাবেন, আগ্রহীরা দেখতে পারেনঃ https://bit.ly/2FIXRUM ।

চলমান জুলুমশাহীর প্রধান একটা প্রক্রিয়াগত কারনঃ ঔপনিবেশিক- প্রান্তিক / লুন্ঠনকেন্দ্রিক পুঁজিবাদ, ঔপনিবেশিক জাতি/ধর্ম/পরিচয় ও রাষ্ট প্রকল্প। এর কারনে ‘আইনের দ্বারা শাসন(যেমন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, নানারকম ইম্যুনিটি দেয়ার আইন ইত্যাদি)’ আর গণতন্ত্রহীনতা, বিচারহীনতা- যা পরিচয়ফ্যাসিবাদের জমিন ক্রমাগত শক্ত করতেছে , পরিচয়ফ্যাসিবাদের ওপর ভর করে চলতেছে অগণতান্ত্রিক সব সরকার। গণতন্ত্রহীনতা সমাজে যোগসাজশভিত্তিক প্রতিশোধ পরায়নতা বা এই অর্থে ষড়যন্ত্রভিত্তিক নানান জুলুম, দ্রুত প্রতিশোধ , দ্রুত পুণ্যলাভ, অর্থকড়ি লাভ করার ইচ্ছা-চর্চা বাড়াইতেছে প্রতিনিয়ত- পরিচয়ফ্যাসিবাদ এখানে কো-অপারেটিভ।মানুষের শরীর-মন-রক্ত-জমি-প্রতিবেশ- সব কিছুই এই প্রক্রিয়ার প্রভাবের মধ্যে আছে। কেউ শহীদ, বেশিরভাগ মজলুমঃ বহু নাম-পরিচয়-অভিজ্ঞতায়। অনেকেই মজলুমের নাম নিয়ে জালিম।

এহ বাহ্য।

#
পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতার পাটাতনে জন্ম নেয়া/ নির্মিত হওয়া / বিকাশ লাভ করা ধর্ম-জাতি-পরিচয়-রাষ্ট- ধারণা ও ব্যবস্থা, তার বর্ণবাদি- পুঁজিবাদ এবং পুরুষতান্ত্রিক মাত্রা , বিশ্বঔপনিবেশিক-পুজিবাদী অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশের প্রান্তিকতাঃ সব মিলায়ে চলমান জুলুমশাহী তৈরি । এখানে উপনিবেশ- পশ্চিমা আধুনিকতার, তার পুজিবাদের সাথে বিভিন্ন ট্র্যাডিশন/ধর্ম/প্রতিবেশ/ইতিহাসের ঘাত-অভিঘাতের জটিল স্কিজোফ্রেনিক জীবন/ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়া যাচ্ছি আমরা। উদাহরণ হিসেবে কয়েকটা ধারা/প্রবনতা/প্রক্রিয়ার উল্লেখ এখানে করা যায়ঃ দ্বীনের নামে/ ধর্মের নামে ‘আরবাইজেশন’-এর চাপ, বাংগালী সংস্ক্রিতির নামে বর্ণহিন্দুর কিছুমাত্র রুচি- দৃষ্টিভঙ্গি চর্চার চাপ, আধুনিকতার নামে পশ্চিমা ঔপনিবেশিক ‘সেক্যুলারিস্ট’ জীবন বিন্যাসের চাপ, ‘ওয়ার অন টেরর’ মডেল ও প্রকল্পের চাপ, ভারত রাষ্ট্রে ‘হিন্দুত্ববাদ’-এর উত্থানের চাপ- এরকম আরো বহু রাজনৈতিক – সাংস্ক্রিতিক প্রক্রিয়ার চাপ আমাদের সমাজ-জীবনে চলতেছে ।‍

এর মধ্যেই চিন্তার, ভাবার, আত্মপোলব্ধিরঃ জ্ঞানচর্চার, সাধনার, উপাসনার, আরাধনার, ভাব-ভাবনা প্রকাশের সময়, পদ্ধতি, উপায়( গান-কবিতা-ছবি-নাচ-তর্ক-বাহাস ইত্যাদি), অবকাশ, পরিসর- সবি ধ্বংস – ভাংচুর- প্রতিনিয়ত পুনর্বিন্যাসের মধ্য দিয়া যাইতেছে। খোদ এইসব জীবনপদ্ধতি এবং অভিজ্ঞতার জটিল ইতিহাসকেই এক লহমায় অস্বীকার, বাতিল, অবৈধ এবং অপরাধ হিসেবে দ্রুতই সাব্যস্ত করা হইতেছে পরিচয়ফ্যাসিস্ট ধারাগুলি থেকে, ঔপনিবেশিক-ফ্যাসিস্ট কায়দায়। পালাগান- কবিগান( যার প্রধান ফর্ম/ধরণ/আকারই হইলো পক্ষে-বিপক্ষে বাহাস করা, তর্ক-ভাষ্য হাজির করার মাধ্যমে ‘পার্ফর্ম’করা), ভাবসঙ্গীতসহ জ্ঞানচর্চা,ভাবচর্চা, উপাসনা-সাধনাার, জীবনের নানা ধরণ, এর সাথে জড়িত মানুষজন-কমিউনিটি এই ঔপনিবেশিক- আধুনিক ধর্মবোধপ্রভাবিত পরিচয়ফ্যাসিস্ট জুলুমের শিকার।

এই বহুমাত্রিক ঘটনাপ্রবাহে প্রাণ হারানোসহ বহু্রকম জুলুমের শিকার হচ্ছেন মর্মগতভাবে উপনিবেশিক আধুনিকতা বিরোধী, পরিচয়ফ্যাসিবাদ বিরোধী, পুজিবাদ -পুরুষতন্ত্র বিরোধী, প্রেম- ভালোবাসার- বন্ধুত্ব-মুক্তির, দ্বীন-ধর্ম-উপাসনার-সাধনার দেশ-সমস্যাভিত্তিক বিবেচনার মানুষজন, ঔপনিবেশিক ও তার আধুনিকতা প্রভাবিত জীবন ও ক্ষমতাসম্পর্কের বাইরের নিবাসী, অধিবাসী, আদিবাসী মানুষজন।

#
ধর্ম- দ্বীন-রিলিজিওন-উপাসনা-আরাধনা- পরিচয়-সংস্কৃতির ধারণা- অনুশীলন-রুপান্তরের ইতিহাস যেমন, তেমনি, ‘বাংলাদেশের’ ‘৯৮ভাগ/৯৯ভাগ মুসলমানের দেশ’ হওয়ার , নির্মানের, রুপান্তরের ইতিহাস-রাজনীতি-প্রক্রিয়া-প্রভাবও সমানভাবে ভাবা জরুরী এই বিশ্ববাস্তবতায়, যদি ইলম, জ্ঞান আর প্রজ্ঞার দাবী রাখতে চাই ইনসাফ আর ইহসানভিত্তিক। সেটাই বাংলাদেশে প্রায় গড় হাজির। এই পরিস্থিতি থেকে বের হবার, জ্ঞান-ইলম-ন্যায্যতা-ইনসাফের, জীবন এবং ইতিহাসের কোনো বিউপনিবেশিক- বোঝাপড়ার ইমানি- এহসানি উদ্যোগের গভীর অনুপস্থিতি লক্ষ্য করার মত।
#
মুসলিম পরিচয়ের মানুষেরা নিজেদের দ্বারা মজলুম তো শুধু পুরুষসহ সব মানূষ শ্রেনী হিসেবে হই-তা না– নারীসহ বিভিন্ন লিংগ পরিচয়/বৈশিষ্টের মানূষেরাও মুসলিম পরিচয় কমিউনিটির মধ্যে জুলুমের স্বীকার হই যুগ যুগ ধরে। এর অঙ্গে এবং বহিরঙ্গে আরো ব্যাপার আছেঃ সেই কবেকার বৌদ্ধ নিধন, বাংলা অঞ্চলে ধর্মান্তর/ইসলামের প্রসার পর্ব, উপনিবেশের কালে ও পরকালে বাউল-ফকির ধ্বংস ফতোয়ার রাজনীতি, বহুকাল ধরে বাউল-ফকির-সহজিয়া-সুফি-তরিকাপন্থী-নিম্নবর্ণ/নিম্নবর্গ ‘হিন্দু’-আদিবাসীসহ আচার- আরাধনা-জীবনভাবনায়-অভিজ্ঞতায় ভিন্নতর কমিউনিটির মানূষেরা যে সংখ্যাগরিষ্ঠের জ্ঞাত-অজ্ঞাত ভাব-ভাষা-সমাজ-রাষ্ট অনুশীলনের চাপ ও জুলুম বহন করতেছেন- তার কারন-প্রক্রিয়া বিচার করার ইমানি দায়িত্ব আমরা কয়জন পালন করা দরকার মনে করতেছি? বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠতার পরিচয়ের চেতনা এবং অনুভূতিওয়ালারা কি ভূলেও এই ভাবনা কমিউনিটি আকারে ভাবে, যে, সে কতভাবে নিজ এবং অপর কমিউনিটির উপর জুলুম করতেছে? তারা নিজেরা কতমাত্রায় জালিম?
#
সেক্যুলার/ফান্ডি/ওয়য়ার অন টেরর জটিলতার আলাপ আর এখানে আনলাম না। আগ্রহীরা সে প্রসংগে এই নোট দেখবেনঃ https://bit.ly/2FKiEHm ।

#

এসব দিক বিবেচনা করেই কেবল বিউপনিবেশিক সাম্য, মর্যাদা, ইনসাফ আর গণতন্ত্রের সমাজ -দেশ-ব্যবস্থা কায়েমের সাধনা পারি আমরা। আসেন, চেষ্টা করি সবাই মিলে। পরম করুনাময় আমাদের সংগ্রাম-তদবির কবুল করুন।

আলেক সাঁই ।

[ সম্পাদনা চলবে]

১৩/১/২০২০।


February 22, 2021
আপনার জীবনবিধান কি সংস্কার বা বাতিল করা দরকার? দ্বীন, ধর্ম, সমাজ ও জীবন ব্যবস্থা প্রসংগে
  • Posted By : admin/
  • 0 comments /
  • Under : writings

সেইসব জীবন দৃষ্টি ও জীবন বিধান সংস্কার অথবা বাতিল করা দরকার, যেসব জীবনদৃষ্টি ও জীবনবিধান সমাজ, দেশ ও দুনিয়ায় নানারকম জুলুম ও বেইনসাফির জন্ম দেয়; বৈষম্য, বিদ্বেষ, মর্যাদাহীনতা সৃষ্টি করে; সামগ্রিকভাবে ও এককথায় জুলুমশাহীর জন্ম দেয়, লালন-পালন করে বা জুলুমশাহীকে টিকে থাকতে সাহায্য করে।

কিন্তু কি দিয়ে বুঝা যাবে কোন সব মত-দৃষ্টিভঙ্গি-ব্যবস্থা-জীবনবোধ-জীবনধারা- জীবনবিধান ইত্যাদি সংস্কার-পরিমার্জন-বদলানো-ফেলে দেয়া-বাতিল করা দরকার? কয়টা সূচক এখানে উল্লেখ করা যায়ঃ

যেসব মত- দৃষ্টিভঙ্গি-ব্যবস্থা- জীবনবোধ-জীবনবিধান >

১/ নিজের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা-মত-পদ্ধতিকে প্রশ্নের উর্ধ্বে মনে করে; নিজের জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে, সে জ্ঞানের প্রত্যয়ন /প্রমাণ / কর্ত্রিত্ত্ব / অধিকার নিয়ে প্রশ্নহীন থাকে , প্রশ্ন উত্থাপনকে অন্যায়/অপরাধ মনে করে

২/ অন্যের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা-মত-পদ্ধতিকে অশ্রদ্ধা করে , বিবেচনায় নেয় না

৩/ নিজেকে সকল বিচারে জগতের শুধু শ্রেষ্ঠ না , একমাত্র মনোনীত , নিজের চিন্তা-মত-ইচ্ছা-অভিরুচি চাপিয়ে দেয়াসহ সকল কিছুর অধিকারী মনে করে

৪/ অন্যের খাদ্যাভ্যাস, যৌনবৈশিষ্ট, গায়ের গড়ন ও রঙ, ভাষা, পরিচ্ছদ, আবাস ইত্যাদি নিয়ে উপহাস , তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে ; জ্ঞান-অভিজ্ঞতা-উপাসনা-রুচি-পরিচ্ছদ ইত্যাদির দেশ-কাল- পরিবর্তন-বিবর্তন-সংস্কার ইত্যাদিকে বিবেচনায় নেয় না

৫/ এক কালের এক দেশের এক পাত্রের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা-মত-পদ্ধতিকে চিরায়ত, শ্রেষ্ঠ ও সার্বজনীন মনে করে; নিজের মত ও পথকে জগতের উপর জুলুম করে প্রতিষ্ঠা করতে চায়

৬/ পুরুষতন্ত্র ও বিষাক্ত পুরুষালীতাকে স্বাভাবিক, প্রশ্নের উর্ধ্বে, ন্যায্য, ঐশী, চিরায়ত ইত্যাদি মনে করে; জন্মসূত্র পুরুষভিন্ন অন্য সকল লিঙ্গের মানুষদের ‘অস্বাভাবিক’, ‘পাপী’, ‘দুষ্ট( কোনো দোষে দোষী), ‘ছোট’/ ‘ইতর’ ইত্যাদি মনে করে, পুরুষতান্ত্রিক যৌনরীতির বাইরের প্রেম-বন্ধুত্ব- যৌনরীতিকে অন্যায়/ পাপ/ ইতর/ ছোট/নীচতা হিসেবে বিবেচনা করে

৭/ বৈষম্য, বিদ্বেষ, বর্ণবাদী –পুঁজিবাদি- পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও দৃষ্টিভঙ্গি লালন-পালন করে, গ্রহণযোগ্য মনে করে, প্রস্তাব করে, চলতে সাহায্য করে; ফ্যাসিবাদ জন্ম দেয়া সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদ ও পরিচয়বাদ লালন-পালন-প্রস্তাব করে।

আরো যেসব সূচক যুক্ত করা যায় মনে করেন, তা এই তালিকার জন্যে প্রস্তাব করলে স্বাগত জানাবো।

‘পাপ-পুন্যের কথা আমি কারে বা শুধাই’- লালন ফকির।

আলেক সাঁই ।

২৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ঢাকা।


February 13, 2021
বামরাজনীতির বিকাশের প্রশ্নে আমি বিনয় সহকারে, আমার দায় নিয়েই কিছু পর্যবেক্ষন এবং মতামত জানাই
  • Posted By : admin/
  • 0 comments /
  • Under : writings

বাম গণতান্ত্রিক জোট গঠিত হবার পর নাগরিক-বুদ্ধিজীবীদের সাথে একটা মতবিনিময় সভায় আমাকে দাওয়াত দেন শ্রদ্ধাভাজন সাইফুল হক। আমি সেখানে যাই মুলত জানতে বুঝতে এবং শিখতে। এক পর্যায়ে আলোচনার জন্যে আমার নাম প্রস্তাব করা হলে আমি ধন্যবাদ জানাই জোটের উদ্যোগের জন্যে, জানাই যে এই জোট গঠনের উদ্যোগ আমার মত অনেকেরই উৎসাহের এবং আশার কারন ।

তবু, বামরাজনীতির বিকাশের প্রশ্নে আমি বিনয় সহকারে, আমার দায় নিয়েই কিছু পর্যবেক্ষন এবং মতামত জানাই। যার মোদ্দা কথা ছিলো, ব্যতিক্রম বাদে, মোটাদাগে, বাংলাদেশের বাম্পন্থী রাজনীতির কাগজপত্র-লিখাবলা এবং চলা দেখলে বুঝা যায়: শ্রেণী, রাষ্ট্র, রাজনৈতিকপ্রতিষ্ঠান বা পলিটি, জাতি, জাতীয় মুক্তি ও জাতীয়তাবাদ, লিঙ্গ এবং লৈঙ্গিক রাজনীতি, উপনিবেশ এবং ঔপনিবেশিকতা, প্রগতি আর বিপ্লব প্রশ্নে দুনিয়ার চিন্তা এবং অনুশীলনের জগতে যত পরিবর্তন এবং অর্জন হইছে, ব্যতিক্রমবাদে বাংলাদেশের বাম্পন্থা সেসবের ধারে কাছে যাওয়া তো দুরের কথা, খোজ খবরও পর্যাপ্ত রাখেনা।

উদাহররণ আকারে, বিশেষ কইরা সেক্যুলারিজম প্রশ্নে গড় বাম্পন্থা যেসব ধ্যান ধারণা পোষন এবং লালন করে, তা দুনিয়ার ওয়্যার অন টেরর প্রকল্প এবং তার ‘সেক্যুলারিজম’-এর বয়ান আর পলিটিক্সের মধ্যে বান্ধা পইড়্যা যায়। এসব থিকা বের হবার তাগিদ দেই আমি।

আরো কিছু কথার মধ্যে এও বলি যে, জাতীয় সম্পদরক্ষাসহ সামাজিক এবং জাতীয় ইস্যুতে নানান আন্দোলনে বামের জোরালো ভূমিকা থাকলেও ‘বাস্তব’, ‘ক্ষমতা’র রাজনীতিতে বামের ব্যররথতার কারন অনুসন্ধান করা দরকার, যদি ক্ষমতা নেয়াকে বাম অপবিত্র জ্ঞান না করে। ন্যুনতম ‘বুর্জউয়া গণতন্ত্র’ যেহেতু বামজোটের ন্যুনতম লক্ষ্য, তাইলে যেকোনো দলের স্বৈরতন্ত্র থিকা কেম্নে সমাজকে বাইর করা যাবে? সেটা মন্দের ভালো কিংবা আপদ-বিপদ তত্ত্ব দিয়া না বুইঝ্যা শ্রেনী এবং জাতীয় প্রশ্নের সম্মিলন- তথা গণতান্ত্রিক পলিটি বিকাশের রাজনীতির মাধ্যমে করা দরকার মনে করি বলে জানাই।

বলি যে, যেকোনো প্রকার, যেকোনো দল/জোটের স্বৈরতন্ত্র মোকাবেলা এবং দেশকে গণতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাবার জন্যে বাস্তব পদক্ষেপ কি- সেটা নিয়ে ভাবা দরকার। জনমত-জনস্বার্থ, জনঅভিজ্ঞতা, সামাজিক বাস্তবতা এবং নিজদের আদর্শ- উদ্দেশ্য- সাংগঠনিক ক্ষমতাকে কোন মাত্রায় কি সম্পর্কে বাঁধলে ক্ষমতার এবং ব্যবস্থার আশু পরিবর্তন হয়- সেটা ভাবা দরকার- এটাও বলি সেদিন।

এও আমরা দেখি, যে, বাংলাদেশের মধ্যবিত্তকেন্দ্রিক বামরাজনীতির একটা বড় বৈশিষ্ট হইলো জলাচল ধর্ম আর ছুতমার্গ।

এর মধ্যে, কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র নাগরিক সমাবেশে জোনায়েদ সাকির হাজির হওয়া নিয়ে বাম মহলে বেশ আলোচনা হচ্ছে। সব মিলায়ে, বাংলাদেশে বাম রাজনীতি এক ক্রান্তিলগ্নে। যাহোক, বামজোটের মতবিনিয়ময় সভায় আমার ২ মিনিটের বক্তবের সাথে আজকে আরো কিছু প্রশ্ন/পয়েন্ট যোগ করা দরকার মনে করি। এসব প্রশ্নের আলোচনা, উত্তর খোঁজা আজকের বাংলাদেশের বাম্পন্থী রাজনীতিতে লড়াইয়ের সংহতির জন্যে প্রয়োজনীয় বোঝাপড়া তৈরীতে সাহায্য করবে বলে মনে করি।

পয়েন্ট গুলার মধ্যে আছেঃ
-নৈতিকতাবাদী( মরালিস্ট/ moralist) রাজনীতি কি কোনো অর্থেই মার্ক্সবাদী রাজনীতি – যখন কিনা তার সাথে ব্রাম্মন্যবাদী পুরুতঠাকুরের ইস্টনাম জপের মিল? নাকি মার্ক্সবাদী রাজনীতি এথিক্স( ethics) তথা চলার নিয়মের কথা বলবে? মার্ক্সবাদী রাজনীতি কি মরালিষ্ট, না কি এথিক্যাল?

– আমাদের ‘সেক্যুলারিজম’ কি হিন্দু এলিটের বর্ণবাদী- ব্রাম্মন্যবাদী সেক্যুলারিজম? যা আদতে ধর্ম তথা ইসলাম বিদ্বেষী?

-শ্রেণী বলতে আমরা বিশুদ্ধ কোনো সর্বনাম বুঝি ? যেমন ‘শ্রমিক’ , ‘কৃষক ‘ ‘বুর্জুয়া’ , ‘সামন্ত’ ইত্যাদি? শ্রেনীকে আমরা নিরঞ্জন অর্থে নিতেছি না তো? এটা ভূল। শ্রেনী একটা সর্বকালের জায়মান ব্যাপার। তাই একই ‘শ্রেনী’তে ভিন্ন ভিন্ন প্রবণতা, লক্ষ্য, অভিজ্ঞতা ইত্যাদির দেখা মেলে। ফলে, শ্রমিকতা, ক্রিষকতা, বড়লোকি- ইত্যাদিকে যান্ত্রিক , অচল-অবশ বস্ত হিসেবে দেখা মানে মানুষের বহু সম্ভাবনাকেই বাতিল করে দেয়া । লিংগ যেমন তরল এবং সামাজিক-সাংস্ক্রিতিক নির্মিতির ব্যাপার, শ্রেনীও তেমন। সমাজে প্রতিনিয়ত এই নির্মিতি চলে, গড়ে, ভাঙ্গে। ধীরে কিংবা জোরে।

-কখন শ্রেনী প্রশ্ন আর জাতীয় কর্তব্য প্রশ্ন এক হয়া যায়? জাতীয় সম্পদ রক্ষার লড়াই আমরা কেন করি? গৃহযুদ্ধ কাদের পক্ষে আর কাদের বিরুদ্ধে যায়? মার্ক্সবাদী রাজনীতির কাঠামোয়, বুর্জুয়া গণতন্ত্র এবং বুর্জুয়া পলিটি চিরন্তনভাবে গণবিরোধী? কখন, কোন মুহুর্তে শ্রমিক/ক্রিষক/নিপীড়িত জনতার কর্তব্য হয় ন্যুনত্ম গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যে লড়া?

– সেই লড়াইয়ে আমরা কাকে বাদ দিবো আর কাকে দিব না? কার সাথে আলোচনা/বৈঠকে বসবো আর কার সাথে বসবো না? সমাজের নানা ধর্ম-বর্ণ-জাতি-লিঙ্গের-শ্রেণির সাথে আমার ‘বিপ্লবী’ রাজনিতি শুধু জলাচলের রাজনীতি করবে চিরকাল? আমি ছাড়া বাকি সবাই অশুদ্ধ, পাপী, বিধর্মী, ছোটলোক? এই নৈতিকতার কষ্টিপাথর আমি কবে হইলাম? কেন হব?

– আমাদের মুক্তিযুদ্ধের, ইতিহাসের একটা মাত্র ন্যারেটিভ বা বয়ান, যা কিনা গণবিরোধী, তা মেনে চলতে বাধ্য করায়, একটা কোনো দলীয় স্বৈরতন্ত্র বহাল রাখার পক্ষে আমার জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে ভূমিকা রাখে, তখন আমার করনীয় কি?

-সমাজের কোন অংশকে ফেলে দিয়ে আমি বিশুদ্ধ ‘কমিউনিস্ট-বাম্পন্থী-সমাজতন্ত্রী-দেশপ্রেমিক-উদারগণন্ত্রী’র সাথে ঐক্য করবো? এই ব্র্যাকেট এবং হাইফেন কি কি শর্তে লম্বা হয়?

– ধরাযাক এখন বাংলাদেশে সঙ্খ্যানুপাতের ব্যবস্থায় ভোট হইলো, আমরা কত আসন আর ভোট পাবো ? বাকীদের সাথে আমরা পার্লামেন্টে বসবো ? সেখানে আলাপ-সংলাপ হবে না? বিশেষ কোনো মুহুর্তে তাদের সাথে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ , ‘ সাম্য’ , মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা’, ‘ সমাজতন্ত্র’ , ‘ শ্রমিক- কৃষকের স্বার্থ’ ইত্যাদি প্রশ্নে কখনোই অন্য কারো সাথে আলাপআলোচনা করার দরকার হবেনা? সংসদ, পলিটি, গণতন্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান কখন গড়ে তোলা দরকার, কখন কোন মাত্রায় পরিবর্তন হওয়া দরকার- তা কিসের ভিত্তিতে ঠিক হবে? কারা সেকাজে নেতৃত্ব দিবে? ইত্যাদি। অলমতি বিস্তরেনঃ ।

এক সনের মুক্তিযোদ্ধা যেমন চিরকালের মুক্তিযোদ্ধা না, এক্কালের বাম্পন্থীও চিরকাল বাম্পন্থী না। ইতিহাসের কাদামাটি গায়ে না লাগানোর যে বিশুদ্ধবাদী পথ, তা কখনই ইতিহাস বদলায় না। সুদুর ভবিষ্যতের লক্ষ্যে কাজ করা মানে বর্তমানের ভূমিকা ভূলে যাওয়া নয়। বর্তমান দূরে রেখে সুদুরের পিয়াসী হইলে অদুর-সুদুর কোনোখানেই ঐতিহাসিক রাজনৈতিক কর্তব্য করা সম্ভব হয় না। সুদুর ভবিষ্যত আজকের বর্তমানতার উপরে দাঁড়াবে। বরং, সুদূর লক্ষ্যকে সামনে রেখে বর্তমান বদলাতে থাকার রাজনীতিই বিপ্লবী রাজনীতি। এটাই ইতিহাস দেখার , বদলানোর বস্তবাদী পথ। তাতে ইতিহাসের কাদামাটি গায়ে লাগে। সেসব চিহ্ন ধরেই ইতিহাস রচিত হয়। আমরা যেন সেই ইতিহাসের স্বাক্ষী হইতে পারি।
‘পাবিরে অমূল্য নিধি, বর্তমানে’।

বামজোটের চ্যালেঞ্জ হইলো এসব দার্শনিক, রণ্নৈতিক এবং কৌশলগত দিক বুঝে জনগণের মধ্যে গণতান্ত্রিক ঐক্যের পথ বিকশিত করা।

সেটা বর্তমান বাম না পারলে ইতিহাস অন্য পথ নিবে। অথবা নতুন বাম রাজনীতি সমাজে বিকশিত হবে। গণতন্ত্রের দার্শনিক এবং রাজনৈতিক বোঝাপড়ার লড়াই যেমন করতে হবে, তেমনি বর্তমানে হাজির হওয়া গণতন্ত্রের জন্যে লড়াই করেই যেকোনো বামকে সমাজে নিজের জরুরত এবং ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্য পথ নাই।

সংহতি।


February 13, 2021
পরিচয় ফ্যাসিস্ট কারা?
  • Posted By : admin/
  • 0 comments /
  • Under : writings

এমন সব মানুষজন, যারা ‘দেশ’, ‘জাতি’র ‘প্রেমে’ অস্থির, আত্মপরিচয়জ্ঞান যাদের জবরদস্তিমূলক আত্মাভিমানে পৌছাইছে, যারা নিজেদেরকে জগতের শ্রেষ্ঠ এবং ‘মনোনীত’ বিবেচনা করতেছেন, এই অলীক শ্রেষ্ঠত্বের অভিমানে অন্যের উপর এবং নিজ পরিচয়রাজনীতির কারনেই সৃষ্ট নিজ পরিচয়গোষ্ঠীর প্রান্তিক মানুষদের উপর জুলুম করতেছেন নিজেদের রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রপ্রকল্প বা অন্যান্য সামাজিক মেশিন দিয়া, কিন্তু পরিচয়রাজনীতির সংকট নিয়া আলাপ করতেছেন না, পর্যালোচনা করতেছেন না পরিচয়ের আপতিকতা, বর্তমানতা ও পরিবর্তনশীলতার , পরিচয়বাদ/ জাতীয়তাবাদ/ জাতিরাষ্ট্র – সীমানা মডেলের, খুঁজে পাইতেছেননা পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতার ভূমিকা, পুঁজিবাদের ভূমিকা, আলাপ করতেছেন না নিজেদের চিন্তা- জ্ঞান- কল্পনা- আকাঙ্ক্ষার ওপর পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতার ভূমিকা ও আধিপত্য নিয়্যা।

‘সেক্যুলার’/ ‘এন্টি’/’পোষ্ট’/ ‘নন- সেক্যুলার’ নির্বিশেষে এই ‘দেশ’/’জাতি’ প্রেমিকরা সবাই পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতা, তার পুঁজিবাদ ও রাষ্ট্রধারণার ছায়ায় বেড়ে ওঠা সম্প্রদায়বাদী, শতাংশের বড়াইবাদী, ব্রাহ্মণ্য আর আশ্রাফত্ববাদী, সমরুপতাবাদী, কেন্দ্রবাদী, আধিপত্যবাদী, জাতীয়তাবাদী/ জাতি ও অন্যান্য পরিচয়ভিত্তিক রাষ্ট্রবাদী/ সীমানাবাদী, উন্নয়ন আর পুঁজিবাদী তো বটেই।

এই কাঠামোগুলার বাইরে কাউরে এখনো পাইলাম না উনাদের মধ্যে।

এনারা ‘মানুষ’ আর ‘সমাজ’কে, ‘দেশ’কে ‘ভালোবেসেই’ ফ্যাসিস্ট পরিচয় রাজনীতি নিয়া হাজির।

‘ভালোবাসা’ যে জুলুম আর ফ্যাসিবাদের রুপ নিতে পারে- তা ভাবার সময় এনাদের ‘ভালোবাসা’র সময়ে কই? গভীরভাবে পুরুষতান্ত্রিক এই ভালোবাসাই কালে কালে ফ্যাসিস্টরা বেসে আসতেছে।

ঔপনিবেশিক আধুনিকতা, তার পুঁজিবাদ ও রাষ্ট্রধারণার ছায়ায় বেড়ে ওঠা সম্প্রদায়বাদী, শতাংশের বড়াইবাদী, ব্রাহ্মণ্য আর আশ্রাফত্ববাদী, সমরুপতাবাদী, কেন্দ্রবাদী, আধিপত্যবাদী, জাতীয়তাবাদী/ জাতি ও অন্যান্য পরিচয়ভিত্তিক রাষ্ট্রবাদী/ সীমানাবাদী, উন্নয়ন আর পুঁজিবাদী চোখে দুনিয়া দেখা আর সমাজ-দেশ নিয়া ভাবার বাইরে, ‘দেশ’ এবং ‘জাতি’কে ভালোবাসার, দুনিয়ায় অধিকার, সাম্য, মর্যাদা আর ইনসাফের চর্চার আর কোনো ভাব, পদ্ধতি, উপায় সম্পর্কে এদের জানা-বোঝার আগ্রহ, ইচ্ছা, খেয়াল, দরকারবোধ- কিছুই নাই।

এদের এই প্রেম আর ভালোবাসা থিকা, খোদা, রক্ষা করো!


February 13, 2021
‘লুঙ্গি কাহিনী’ বইয়ের অংশ বিশেষ
  • Posted By : admin/
  • 0 comments /
  • Under : writings

[ব্যক্তিগত ব্যাপার রাজনৈতিক ব্যাপার। জরুরী সত্য কথা। নিজের কোন ঘটনা সমাজে প্রকাশযোগ্য ও প্রয়োজনীয় আর কোনটা নয়-এটা একটা নির্বাচন। একটা সিদ্ধান্ত যেমন ধরা যাক,’ লুঙ্গি কাহিনী’র কথা। এই কাহিনী লিখা শুরু হয় শহিদুল আলম ও ব্রাত্য রাইসুর মধ্যে ই-মেইল বিনিময়ের সুত্রধরে। সেখানে প্রসঙ্গক্রমে এই লেখক ও তার লুঙ্গি পরা বিষয় হিসেবে আছে। সেইসূত্রে আমার কিছু বক্তব্য যুক্ত করে এই রচনা এই কথাবার্তা, যদি ধইরাও নেই যে আমাকে কেন্দ্র করে, তবু, সমাজে এই ঘটনা ঘটতেছে, আমি নিজেও একজন হিসাবে সমাজের এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করতেছি। আমি মনে করি, এই ঘটনা সমাজের ব্যাপক সংখ্যক মানুষের কাছে পেশ করা দরকার, কারণ একটা গুরুতর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইস্যুতে এই তর্ক। এখানে, এই পেশকার, ধরা যাক, তর্কে/অনুশীলনে ‘কামিলগার’ নন, তাতে ইস্যু এবং তর্কের তাৎপর্য কমে না। বরং বোঝাপড়া তৈরী করতে সাহায্য করে। তাই সংকলনে এই কাহিনীর ভুক্তি।

লুঙ্গি কাহিনী/ যাপন ও সম্পর্ক শাস্ত্রের একটা ভূমিকা ।। অরূপ রাহী
প্রকাশকালঃ ২০০৯।
প্রকাশকঃ খড়িমাটি।
প্রাপ্তিস্থানঃ সংহতি বইঘর, কনকর্ড এম্পরিয়াম, কাটাবন, ঢাকা। ]

প্রিয় ব্রাত্য,
সেদিন কথা বলে ভালো লাগলো। একটা জিনিস আপনাকে বলা হয় নাই। আমি আপনার পোশাকের ব্যাপারে বিশেষ করে আপনাকে শ্রদ্ধা করি। ধরে নিচ্ছি এটা আপনার রাজনৈতিক অব স্থান থেকেই এসেছে। সে তো আমাদেরসকল কাজের ক্ষেত্রেই সত্য। তবে কথার সাথে কাজের যেখানে এতো ফারাক থেকে যায়, সেখানে আপনার চলা ফেরার ক্ষেত্রে পরিস্কার অবস্থান রাখেন দেখে আমার খুব ভালো লাগে।
আপনাকে অভিনন্দন।

শহিদুল
……….
ডিয়ার শহিদুল
আমি তো এক বছর ধইরা অষ্ট্রেলিয়ায়। আমার ধারণা আপনি রাহীর সঙ্গে আমারে মিলায়া ফেলছেন। মানে লুঙ্গি পরা রাহী। আমি জানি না। জানায়েন।
এমনিতে আমি ভালো। কিন্তু পোশাক তো আমার রাজনৈতিক না। আর যদি আপনি আমারে রাহী বইলা ভুল করতেছেন তবে বলি রাহীর ওই লুঙ্গি পরা আমার আপত্তির কারণ পোষাক যদি নিশান হয়া দাড়ায় তা নিয়া…আগে নিশ্চিত হয়া লই,পরে কথা বাড়ামু।
ভালো থাকবেন।

রাইসু
……

রাইসু,
হ ভাই, আমি ভুলই করছি। এবং তর্ক করতে রাজি আছি। তবে যোগাযোগ তো হয়া গেলো। গোলামী পোশাক ছাড়া আমরা ভদ্র হইতে পারি না, এটা আমার জন্য খুব বিরক্তির ব্যাপার।তবে এইটা নিয়ে লম্বা আলাপে ঢুকতে চাই না। এর বাইরেও অনেক কাজ আছে। ভালো থাইকেন।
শহিদুল

আলাপের বাইরে আপনের অনেক কাজের খবর অবশ্য পাই। লম্বা আলাপে আমারও ইচ্ছা নাই। দুই লাইনে সারি। আমাগো ভদ্র হওয়া যে দরকার তাও সাহেবরা শিখায়া গেছে। ভদ্রতা আমদানী করা জিনিস, গোলামীর মতই। তাইতে ওইটা উনাগো পোশাকেই হইতে হবে, যেমন উনাগো আচারেই ভদ্রতার প্রকাশ। গ্রামের সব মানুষ বিপ −ব না করতে না করতেই লুঙ্গি পরতেছে। শহরের বিকল্প বুদ্ধিজীবী হইতে গেলে বিকল্প পোশাক তো একটা লাগবই। আর এনজিও-ওয়ালারা এই রকম রুরাল (অরগানিক) বুদ্ধিজীবী দেখলে অনেক খাতিরও করে। কি আর করা! আপনে লম্বা আলাপে ঢুকবেন না।

আপনারে সালাম জানাই। ভুলের কারণে যে আপনের কথা শোনা গেল তাতে আমার অনেক আনন্দ।

রাইসু

২.
সাল এর হিসেবে ২০০০-এ শুরু এই ঘটনার। আমরা তখন কয়েকজন বন্ধু মিলা লোকজ নামে একটা সংগঠন শুরু করছি। শ্যামলীতে একটা বাড়ীর পিছন দিকের অংশে, নীচতলায়, দুইরুমের একটা জায়গা ভাড়া কইরা আমরা সেই খানে কাজ করি, থাকি উন্নয়নের রাজনীতি আমাদের একটা গবেষণার বিষয়। ‘রাজনীতি’, ‘এনজিও’ থিকা নানারকম লোকজন আমাদের ওইখানে আসে-টাসে।

একরুমে আমরা থাকি-ঘুমাই, আরেক রুমে কাজ করি। মাঝখানে একটা ভাঙ্গাচুড়া দরজা। প্রতিদিন সকালে ‘ভিতরের’ রুমে গোসল খাওয়া-দাওয়া সাইরা ‘লুঙ্গি’ খুইলা ‘প্যান্ট’ পইরা ‘বাইরের রুমে’ আইসা ‘অফিস’ করি। আমার বন্ধুরাও দুএকজন তাই করে। প্রতিদিন এই ‘ঘর’ ‘বাহির’ করি। ‘অফিস’ এ ‘বাইরের’ লোকজন আসে, আমি লুঙ্গি খুইলা, প্যান্ট পইরা তাদের সঙ্গে সালাম-আদাব করি। কিন্তু, যেমন, ‘বাজার’ করতে যাই ‘লুঙ্গি’ পইরা। ‘বাজার’এও অনেক লোকের সাথে দেখা হয়। ‘লুঙ্গি’ পইরা সালাম আদাব করি, অসুবিধা হয় না। আমার একটু কেমন কেমন লাগে।

মানুষ লুঙ্গি পরলে একরকম, প্যান্ট পরলে আরেক রকম!… নিশ্চয় পোশাক ছাড়া আরেক রকম! তখন ঘরে থাকলে সেটা ঘরের ভিতরে আরেক দুনিয়া! বাইরে থাকলে আরেক সেইটারে বাইরের জগতে মিলায়া ফেলে ল লোকে তারে ‘পাগল’ বলে, ‘অপ্রকৃতিস্থ’, ‘অ-সংস্কৃত’, ‘আনকালচারড’ বা আরো কিছু বলে। আমি ভাবলাম, অতদুর না হয় নাই গেলাম লুঙ্গি-প্যান্ট-এর আইল ভাঙলে ‘বাইরের জগতে’ কি হয় একটু দেখি।

২.২
আমি লুঙ্গি পইরা সালাম আদাব করা শুরু করলাম। ‘অফিস’ এ বসা শুরু করলাম, বাইরে, অন্য ‘অফিসে’ যাওয়া শুরু করলাম লু ঙ্গি পইড়া। সাথে আছে লম্বা চুলের ঝুটি আর ওড়না আমারে দেইখা ‘শিক্ষিত ‘দের কেউ আড়ালে, কেই সামনে দিয়া মুচকি হাসে, কেউ বলে ‘বাউল’, কেই বলে ‘নগর বাউল’, বলে ‘কাদের সিদ্দিকীর দলে গেছেন নাকি’, কেউ বলে ‘আসল’, কেউ বলে ‘লোকজ’, কেউ বলে ‘ভং ধরছে’। ‘বামপন্থী’ কেউ বলে ‘অ্যানার্কিস্ট”, গ্রামের ‘সাধারণ’ নারী-পুরুষ অনেকেই বলে,’মেয়েদের মতো’। ‘শহরে’ তো বটেই। কেউ কয় ‘হাফ লেডিস’…। গরীব রিক্সাওয়ালা কিংবা ঢাকার লোকাল বাসের কন্ডাকটরের কাছে আমি কখনো ‘অ াপনি’, কখনো ‘তুমি’। কখনো কয় ..’লেডিস নামব’..কখনো ‘সাধু’ ফকির, কখনো অন্য কিছু। …এনারা দেখছি প্যান্ট-শার্ট পরা লোকজনরে ভাই এবং আপনি সম্বোধন করেন।…. পুলিশ যে কতবার ধরছে, চেক/সার্চ করছে তার ইয়ত্তা নাই। তাদের ‘সন্দেহ’ হয়। দেইখ্যা ‘ভদ্রলোক’ মনে হয় না। (থ্রি-কোর্য়টার পড়লে খালি ভদ্রলোক মনে হয় তাই না, এলিট-এলিট একটা ভাব আসে! আহা, একদিন থ্রি কোয়ার্টারও পুরান/ক্ষ্যাত হয়া যাবে! আসবে নতুন কিছু! এলিট /স্মার্ট ভাবের নতুন কিছু!) ‘জঙ্গি’ (দাড়ি-চুল আছে, ফতুয়া, সাদা ওড়না/গামছা আছে,), ‘গাঁজাখোর’, এমন কি ‘বেশ্যার দালাল’ও মনে হয় হয়ত!
মাল্টিকাল্টি জাতিসংঘের বা তার শাখা-প্রশাখ ার কোনো মিটিং-এ সমস্যা হয় নাই।আর্ন্তজাতিক কোনো বেসরকারী মিটিং-এ তো নয়ই। কোনো কোনো তারকা হোটেল বা ব্র্যান্ড খাবার দোকানেও না। কিন্তু বাংলাদেশে শেরাটন, সোনারগাঁও, লা ভিঞ্চি, আমেরিকান ক্লাব, বসুন্ধরা শপিং মল, স্টার সিনেপ্লেক্স, কুপারস (খাবারের দোকান).., আরো কোন কোন ক্লাব ..এইসব (‘প্রথম শ্রেণী’র নাগরিকদের) জায়গায, লুঙ্গি নিয়া ঝামেলা হইছে। ওই সব জায়গায় ‘লুঙ্গি পরিহিত ব্যক্তির প্রবেশ নিষেধ’। আমি তাদের ‘পোশাক বিধি’ নিয়া জানতে চাইছি। অনেক জায়গায় আমার সঙ্গী বন্ধুরা আমার ‘পরিচয়’ দেয়ার পর সেখানকার কর্তারা আমাকে ‘যাচাই-বাছাই’পূর্বক প্রবেশাধিকার দিছেন। আমি যে ‘আর্টিষ্ট’, ‘কবি’, ‘গায়ক’!….অনেক জায়গায় তাও ঢুকতে দেয় নাই। যদিও ঐসব জায়গায় ফরমাল পোশাকের বাধ্যবাধকতা আইন বা বিধিবিধান আকারে নাই। প্রথা। শাসকের প্রথা। অন্যরা অনুসরন-অনুকরন-পালন করতেছে মাত্র। আমি ছোটোলোক চাষা/রিক্সাওয়ালা কিংবা ভিক্ষাজীবী তো হইতে পারি! ছোটোলোকরা এইরকম দামী জায়গায় ঢুকলে ‘বড়লোকদের দোকানের অপমান!

অনেকে ‘চুপ’ থাকে। কিছু বলে না। অনেকে আড়ালে মন্তব্য করে। সামনে করে দু একজন। আমি তখন যেখানে যেরকম বইলা সারি। অনেক অফিসে যাইতে নিরাপত্তাকর্মী আটকায়। অনেক অফিসের ‘প্যান্ট পরা বড় বস’ আমারে ‘দেখতে পারে না’।… ‘বিদেশ’ও মিটিং-সিটিং এ যাই লুঙ্গি পইরা। চাই বা না চাই, এই ‘এক্সোটিক’পোশাকের কারণে ‘একস্ট্রা’ ‘খাতির’ কইরা কেউ নগদ নারায়ন সাধে নাই। মিটিং-সেমিনার-সম্মেলনে যারা আসে টাসে তারা পোশাকের এই ‘লুঙ্গি’ ঘটনায় বেশির ভাগই নির্বিকার। আমার ধারণাও ছিল সেইটা অনেকে এইরকম ‘অর্গানিক’,’লোকাল’, ‘রুরাল’, ‘ইন্ডিজেনাস’, ‘স্পেশাল’ মাল অনেক দেখছে। অনেকে দেখলেও খেয়াল করে না। অনেকের দেখার দরকার বা ইচ্ছা নাই। সুবিধা নিতে চাইলে তার লাইন আলাদা। ফল হয় কি-না আমি জানি না।

৩.
আমি, সাধারণ বিচারে একজন ‘ শিক্ষিত মধ্যবিত্ত’, ‘সমতলের বাঙালি’ ‘পুরুষ’ হিসেবে পাবলিক-প্রাইভেট/ঘর-বাহির-এর যে অভিজ্ঞতা লুঙ্গি কাহিনী মারফত পাইলাম, আমি নিশ্চিত ‘নারী’ বা অন্য পরিচয়ের কারো ক্ষেত্রে তা অন্যরকম। সমাজে পুরুষের পাবলিক জগত এক রকম, না রীর আরেক। সাধারণভাবে পুঁজিবাদ পাবলিক-প্রাইভেট ভেদ দিয়া কাম সারে। নারীর বেলায়ও তার প্রমাণ পাওয়া যাইব। কিন্তু সমাজে নারীত্ব ও পৌরুষের সংজ্ঞাও তো নির্মিত ও পরিবর্তনশীল। ফলে বিশেষ অবস্থার বিশেষ অভিজ্ঞতা হবার কথা।….

আমরা নানা কাজেকর্মে ও চিন্তায় ‘আধুনিকতা’ শিক্ষা’, ‘ভদ্রতা’…এই সব নিয়া প্রশ্ন তুলি অনেকেই এই প্রশ্ন আজকাল করেন। বলি যে ‘কোক’-‘পেপসি’, মাইস্পেস, হাই-ফাইভ, ডিজুস, থ্রি-কোয়ার্টার, বিলিয়ার্ড, পুল, মাংসপেশি, নাভি, টাটু,…ঝুটি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, হাফ-পাতি-ফুল-লিবারেল ‘ফ্রেন্ডশীপ’ এবং ‘প্রেম’ দিয়া কি আমরা ‘স্মার্টনেস’ বুঝব? বলি যে আমরা যা করি, যা পরি, যা খাই, যা ভাবি, যা বলি, যা গোপন করি, যা প্রকাশ করি, যা প্রকাশ্য গোপন করি, যা গতরে রাখি, যা মনে রাখি, যা চাই কিন্তু পারিনা,…সব দিয়াই আমি/আমরা আমাকে/আমাদেরকে বুঝবো। সবই অবস্থা, থাকা, না থাকা, ইচ্ছা, অনিচ্ছা,আকাঙ্ক্ষা…ইত্যাদির প্রকাশক। যে শর্টস পরে, থ্রি- কোয়ার্টার পরে, নাইকির জুতা গেঞ্জি পরে, কিংবা নাম না জানা কোম্পানির মালপত্র পরে, তারও পোশাকের সামাজিক নাম-নিশানা আছে। একে অন্যের চিহ্নায়ক। সমাজের, প্রতীক ব্যবস্থার অংশ। ভাষা। আমি আপ্নি চাই-না চাই, জানি-না-জানি। নিশান না থাকারও নিশান আছে। সকলেই নিশান উড়ায়া চলতেছে। না টের পাইলেও উড়তেছে ঠিকই। কি নিশান, কেন নিশান, কিসের নিশান-সেইটা বড় বিষয়। এই প্রতীকায়ন চলতে থাকে। চিহ্ন বদলায়। নির্ভর করে কারা ক্ষমতায়। উৎপাদন পদ্ধতির, অর্থনীতির ধরন, সংস্কৃতির ধরন। ফরমাল পোশাক ফরমাল ক্ষমতা। তারা চাইলে ইনফরমাল পোশাক ফরমাল অনুষ্ঠানেও পরতে পারেন। সমস্যা নাই এই ক্ষমতায় স্বীকৃতরাও চাইলে পারেন। শাসক শ্রেনীর সংস্কৃতির দাপট, আবশ্যক শৃংখলা বাংলাদেশে এই সংস্কৃতি দালালী বা মোসাহেবী, লুম্পেন, হীনমন্যতার সংস্কৃতি।

নিখাদ, নিরপেক্ষ, কেবলমাত্র ‘ফ্যাশন’ বইলা কিছু নাই। পিওর স্টাইল কিছু নাই। দেখতে ‘সুন্দর’/’মজার’/’দারুণ’/’নতুন’/ ‘সাধারণ’ একটা কিছু পিনলেই/নিলেই/খাইলেই হইল এত নিরীহ এবং সরল? নির্বিকার ‘সরলতা’ অন্যায় সন্ত্রাসের পক্ষে যায়। ‘নিরপেক্ষতা’ও। ‘হাজার বছর’ ধইরা লুঙ্গি পরা হইল ‘হাজার বছর’ ধইরা তার নিজের নির্মান-আবিষ্কার-বিনির্মান প্রকাশ-গোপন-ভাব-অভাব। খেয়াল-খুশি মাত্র না। শীত-গরম শুধু না। স্বীকৃতি আদায় বা নিজের অস্তিত্ব জাহির মাত্র না। আসনা-বাসনা পূরণ মাত্র না। এক বা একাধিক, নানা মাত্রায়। এর ইতিহাস-ডিসকোর্স-কুরসিনামা-রাজনীতি-অর্থনীতি আছে। ‘আমি’র শুধু টেকনোলজি না, প্রত্নতত্বও আছে। তা কেবল অতীতের না। বর্তমানের। ভবিষ্যতের।

উপনিবেশ, তার ‘ভদ্রতা’, পুঁজিতন্ত্র, তার ‘উদারতা’, ব্যক্তিমালিকানা ও তার সংস্কৃতির দাপট, পুরুষতন্ত্র, দমনতন্ত্র-এসবের কারণে আপাত নিশানবিহীনতা, প্রতীকবিহীনতা ঘটে প্রতিরোধে নতুন নিশান/প্রতীক/চিহ্ন দরকার হয়। প্রতিরোধ নতুন নিশান/প্রতীক রূপলাভ করে। প্রতিরোধ নতুন প্রতীক তৈরী করে। হায়ারারকি কবে থাকবে না, আমি দিন-তারিখ দিতে পারব না। তার আগ পর্যন্ত তাই নিশানের চর্চা জনগণতান্ত্রিক বিপ−বের অন্যতম করণীয়। এইখানে বইলা রাখি, ‘গণতন্ত্র’ বইলা আমরা যে জিনিস সমাজে/জগতে দেখি, শুনি, তা সমাজ-শাসনের পদ্ধতি হিসাবে, আদর্শ হিসেবে, সংস্কৃতি হিসেবে চইলা আসতেছে। এর নানা রকমফের-তরিকা আছে। যেমন পশ্চিমা ধাঁচের ‘গণতন্ত্র’। এর বয়স পুঁজিবাদের সমান। মৃত্যুও পুঁজিতন্ত্রের সাথেই। বিকশিত/উদার পুঁজিবাদ প্রাইভেট খায়েশের/ইচ্ছার/অনুভূতির/মূল্যবোধের পাবলিক ভোগ ততখানিই অনুমোদন করে, যতক্ষণ তা উদারনৈতিকতার ফ্যাসিবাদকে চ্যালেঞ্জ না করে। এর ব্যাত্যয় ঘটলে সে, যেমন, ‘হিজাব’বিরোধী আইন করতে পিছপা হয় না। পুঁজিবাদ তা র জ্বালানী সংগ্রহ করে নিজ ও পররাষ্ট্র জনগণকে শোষণ করে। আমরা যারা পুঁজিতন্ত্রের ফাঁপড় ও দাবড়ানি চাই না, তারা সমাজ-ব্যবস্থা চালাইতে একটা অংশগ্রহণমূলক, অর্ন্তভূক্তিমূলক, সংহতি ও সহযোগিতামূলক সমাজব্যবস্থা, ব্যক্তিমালিকানার দাপটহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চাই গণতন্ত্রের নামে যদি ব্যক্তি ও সিন্ডিকেট শাসন চলে, তবে তার বিনাশ করার মাধ্যমে সেটার সম্ভাবনা তৈরী হয়। তার বহু নাম হইতে পারে। যেমন, জনগণতন্ত্র। এই ব্যবস্থা বাংলাদেশে এখনও প্রতিষ্ঠা পায় নাই।

যেই সব নীতি, চর্চা, প্রতিষ্ঠান, আদর্শ আমি মানি না, তার চিহ্ন আমি স্বেচ্ছায় বহন করব না জোর করলে তা প্রতিরোধ করব। সেই ব্যবস্থার চর্চা আমি করব না। ‘নিজের’টা, ‘নিজে’র মত করব, যতখানি, যেভাবে পারি। যে বা যারা জনগণতান্ত্রিক বিপ −ব চায়, সে বা তারা এইটা করবে। এর নাম জীবনধারা, জীবনচর্চা। লাইফস্টাইল। খাওয়া, পড়া, বসত-বাড়ি, প্রেম-ভালবাসা, সমাজ-সংগঠন…সব। অধিপতি শ্রেণী/মতাদর্শ ও তার পোষ্যরা যেখান থেকে যে লাইফস্টাইল নিক না কেন, নিজে যেটাই ভোগ করুক না কেন, সে চায় অন্যপক্ষকে কোনো এক বা একাধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে। শাসন করতে। পণ্যপুঁজিবাদ নাম নিশানা-চিহ্ন-প্রতীক দিয়াই তো পাবলিকরে খাওয়াইয়া পরায়া কাম সারতেছে। বাসনা যন্ত্র, পুঁজি ও মুনাফা যন্ত্র চালু রাখতেছে। রাষ্ট্র, আধিপত্যমূলক সমাজ-শাসন এবং ‘বিজনেস অ্যাজ ইউজুয়াল’ নিজের সুবিধামতো লাইফস্টাইল চায়, মানুষকে সে অনুযায়ী চলতে বাধ্য করার চেষ্টা করে, নানা কায়দায় তাকে ‘উপভোগ্য’, ‘লোভনীয়’ করে তুলতে কসুর করে না লাইফস্টাইল তাই রাজনীতি। লাইফস্টাইল যার যা তার সেই রাজনীতি। যিনি যে লাইফস্টাইলের পক্ষে, তার সেই রাজনীতি।

আমি যদি পুঁজিতন্ত্র, পুরুষতন্ত্র, নির্বিকার ভোগবাদ, নিপীড়ক ক্ষমতাকাঠামো-এইসব জিনিস না চাই, আমি যদি ‘উপনিবেশ’, ‘আধুনিকতা’র কোনো আছর নিজের মাথা এবং সমাজ থিকা ফেইলা দিতে চাই, তবে আমি ঘর-গেরস্থালী, সমাজ-জামাত-পাবলিক জগত, সম্ভব সব রকম ‘ফ্রন্টে’ তার বিরূদ্ধে লড়ব। শরীর সেই লড়াইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্ট এটা গোপন-প্রকাশের ধারণা পাল্টায়া দেয়। সদর-অন্দর পাল্টায়া দেয়। ক্ষমতার বিন্যাস পাল্টায়া দেয়। কাজটা হইতে পারে সমালোচনা, পর্যালোচনা ও বিশে−ষণ, বিদ্রূপ ও উন্মোচন, সম্মুখসমর, মাথা-শরীর ও সমাজে স্বাধীন অঞ্চল/মুক্তাঞ্চল গঠন, এর পরিধি বাড়ানো। কিভাবে, কখন, কোন মাত্রায়-সেটা বিবেচনা। কোনটা কাজ না? যারা, ধরা যাক, ‘ভবিষ্যত’, ‘মুক্তি’ ইত্যাদিতে আস্থা রাখেন না, বর্তমানে, নগ দে চান, তাদের জন্য তো এই লড়াই আরো জরুরী!

চিন্তা এবং চিন্তার পদ্ধতি না বদলায়া শুধু পোশাক বদলায়া লাভ নাই। আবার চিন্তা বদলায় বইলাই পোশাক বদলায়। পোশাক বদলায় বইলা চিন্তা বদলায় না। বড়লোক তার সুবিধা ও সংকট থিকা যা খায়-পড়ে তা অ-বড়লোকের জন্য ফ্যাশন। বড়লোকের সেট করা ফ্যাশন উচ্চ মধ্যবিত্ত অনুকরণ করে। মধ্যবিত্তও চেষ্টা করে। এইটা কোন পরিবর্তন না।

লুঙ্গি-শাড়ী-স্যুট-সাফারি জাতীয়তাবাদের আলু-মুলা না। জাতীয়তাবাদ নিজেরটা পাওয়া হয়া গেলে অন্যের ওপর আগ্রাসন চালাবে না তার গ্যারান্টি নাই। লাইফস্টাইল জনগণতন্ত্রায়নের সিদ্ধান্ত স্বাধীনতা, স্বায়ত্বশাসন ও সংহতির সিদ্ধান্ত। স্বাধীনতা, স্বায়ত্বশাসন ও সংহতির জন্য চাই লাইফস্টাইলের জনগণতন্ত্রায়ন। ‘জাতীয়তাবাদী’, ‘দেশপ্রেমিক’, ‘জনগণের পক্ষের’ দাবীদার যে কারো মৌলিক করণীয়ের মধ্যে পরে জনগণতান্ত্রিক লাইফস্টাইল ও সমাজ সংগঠন ও ব্যবস্থাকে সমর্থন করা। না পারা টা তাদের স্ববিরোধের প্রকাশ।

Eida gelo ek dik. Poshaker aro sthan-kal-patro bhed thakbe(jemon thandar deshe gele ami ki korbo?). Kintu tar che boro kotha amar pratyahik jibon o shomaj. Poshaker protibesh-rajnitir (political ecology) dik ase. sei alochonao dorkar…

…shobar jonno lungi pora joruri na. abosshok o na. amio je sharajibon, shobshomoy lungi porbo-emon protigya kori nai. karon, bishoyta lora i korar. Onushiloner maddhome tar protik o koushal nirdharoner. jara amar ei `cultural monopoly’ bhangte chan, tara swagoto!

প্রশ্ন হয় : লাইফ-স্টাইল কতদুর যায়? পুঁজিবাদ তো ‘বিপ্লবী’ লাইফস্টাইলকে পণ্য বানাবে আর সমাজের মৌলিক কাঠামোগত পরিবর্তন তো টি-শার্ট পড়ার মত ‘সহজ’ কর্ম নয়। উত্তর : পুঁজিবাদ ‘বিপ্লবী’ লাইফস্টাইল পুরোটা নিতেও পারে না। চায় ও না। আর ‘বিপ−বী’ লাইফস্টাইল কোনো খাপে মোড়া জিনিস না। লাইফ-স্টাইল/জীবনধারা শুধু লুঙ্গি-শাড়ী চুড়ির মামলা না। এইটা জীবন-সমাজ-জগত সম্পর্কে ভাবনা ও অনুশীলনের মামলা। এতে তাই বিপ −বী সৃজনশীলতা, সতর্কতা ও কৌশলের ব্যাপার আছে। ‘বিপ−ব’ টিশার্ট ফতুয়া পড়ার মত সহজ কর্ম না। ঠিকই তো।

জনগণতান্ত্রিক লাইফস্টাইল ‘উদার/ বুর্জুয়া ‘ পরিবেশে আরামছে করার কোনো ব্যাপার না। এটা একটা লড়াই। এটা মুক্তবাসনার অনুশীলন। কেবল ব্যক্তিকেন্দ্রিক বাসনা পূরণ না সমাজের স্ববিরোধের প্রকাশ শুধু না। জনগণতান্ত্রিক লাইফস্টাইল বুর্জোয়া ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ না। জনগণতান্ত্রিক আচার-অনুশীলন। ‘ব্যক্তি’-‘ব্যক্তি’, ব্যক্তি-সমাজ, ব্যক্তি-সংগঠন, ব্যক্তি-উপায় /উপকরণের এমন সম্পর্ক, উৎপাদন, বন্টন ও ভোগের এমন ধরন চর্চা (লাইফ-স্টাইল), যা ঘরে-বাইরে, সমাজে অ-ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে সম্ভব করে তোলে। যা ব্যক্তি ও সমষ্টির সুরক্ষা ও বিকাশ নিশ্চিত করে। এর জন্য দরকার একটা পারষ্পারিক বোঝাপড়ার মধ্যদিয়ে চর্চিত সামষ্টিক প্রক্রিয়া ও উদ্যোগ।

কিন্তু কর্তা কে? যে বা যারা সিদ্ধান্ত নিয়া একটা কাজ করে; ঘটনায় তার অংশগ্রহণ এমন যে তা ঘর-বাহিরের সীমানায় ধাক্কা দেয়। নাড়ায়ে দেয়। সরায়া ফালায়। ভাইঙ্গা দেয়। কায়েমি স্বার্থের আরাম হারাম করে। ঘটনা এবং অবস্থা ও ব্যবস্থার নতুন বিধি-বিধান তৈরী করে। তখন রাজনীতি বদলায়। প্রেম বদলায়। বিজ্ঞান বদলায়। শিল্প বদলায়। সংস্কৃতি বদলায়। সমাজ বদলায়। এ সবের মধ্য দিয়া সত্য প্রকাশিত হইতে থাকেন। এই পথ, এই প্রক্রিয়া, এই যাপন, এই সম্পর্ক বিকাশ কোনো পুতুপুতু চর্চা নয়। বিপ্লবী ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমাজ ও সংস্কৃতির, ইতিহাস ও বর্তমানের রক্তক্ষরনেই তা সম্ভব হয়।

৪.
রঙের পরলাম। ‘নিরঙ্গা’ও পরলাম। পার দে ওয়া, পার ছাড়া, নকশা করা…নানা রকম। লুঙ্গির সাথে ওড়না, ফতুয়া, এইসব নিয়াও অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা আমি করছি। কিন্তু মামলাটা আমার কাছে শুধু তিনটুকরা কাপড়ের না। এবং আমি শুধু তিনটা কাপড় পড়ি নাই। পায়ে আলতা-নুপুর শুধু পরি নাই। কপালে ফোঁটা শুধু পড়ি নাই। চুলের খোঁপা আর বেনী শুধু বান্ধি নাই। কানে ফুল শুধু পড়ি নাই।’দৈনন্দিন’, ‘সামাজিক’, ‘রাজনৈতিক’, ‘সাংস্কৃতিক’ কাজকর্ম করছি। এই সবের ভিতর দিয়া, মোটা-দাগে আমাদের সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী, লিঙ্গ ও পেশায় নানারকম যোগাযোগে ও মিশামিশিতে ‘নিজ ‘ এবং ‘অন্যে’র ঘর-বাহির, পাবলিক-প্রাইভেট চর্চা, সৌন্দর্য-চেতনার দশা কিংবা চালশা, লিঙ্গচেতনা, নারী-পুরূষ চেতনা, বন্ধুত্ব,প্রেম,যৌনতা,খাওয়া-পরা, সমাজ-সংস্থার আশা-আকাঙ্খা বোঝার চেষ্টা করছি। অনেকে আরো অন্যকোনো ভাবে করেন।…

দেখলাম- আমরা, ‘সবচে’ ‘বিপ্লবী আকাঙ্খাসম্পন্ন’ কর্র্মীরাও যেন ‘বিপ্লবের’ ভয়ে ভীত। এই ভয় আরেক ‘নিজ’ কে দেখার ভয়। ‘মুক্তির’, ‘আনন্দের’ ‘স্বাধীনতার’ ‘নতুনে’র, ‘আজব কিছু’র স্বাদ-অভিজ্ঞতা কে ভয়। তাই আমরা অনেকে শ্রেনীসম্পর্ক-নারী-পুরূষ-সৌন্দর্য যৌনতা -প্রেম-বন্ধুত্ব ইত্যদি প্রশ্নে দারূন রক্ষনশীল, কায়েমীস্বার্থবাদী (প্রতিক্রিয়া শীল, কার্যত বর্নাশ্রমপন্থী, ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট আরশীয় অবজেকটিভ দৃষ্টিভঙ্গীওয়ালা’দের কথা না হয় নাই বললাম)। ‘বিপ্লব’কে, ‘মৌলিক পরিবর্তন”কে তাই অনেকে ভবিষ্যতের ঘটনা হিসেবে রাখতে চাই, ‘ঐতিহাসিক’ঘটনা হিসেবে চাই, প্রক্রিয়া হিসেবে চাই না। বর্তমানের যাপন হিসেবে চাই না। যেটুক চাই অনেকে, তা অনেক ক্ষেত্রে নগদার্থনীতি সম্ভব হয়ে ওঠে বলে। ফলে ‘বিপ্লব’ ‘অসম্ভব’ “অধরা” থেকে যায়। অথবা ‘ঐতিহাসিক’ কিছু একটা হওয়ার পর কেউ কেউ বলে ওঠে ‘এইটাই বিপ্লব’, এইটাই অমুকতন্ত্র! এবং তার নামে শুরু হয় অমুকবাদ (ফ্যাসিবাদ) জিন্দাবাদ!…কিন্তু বিপ্লব হইল বিপ্লবী সমাজ জীবনের অনুশীলন। অনুমান না। বর্তমান সাধনা। পরিবর্তনের অনুশীলনে: পাবি রে অমূল্য নিধি বর্তমানে। অগ্রাধিকার থাকতে পারে। কিন্তু কোনটা বাদ দিয়া না।

“অধর” যদি বিপ্লব, তবে তাকে অধর দিয়ে ধরো। জনগণতান্ত্রিক লাইফস্টাইল আর জনগণতান্ত্রিক সমাজ/সংগঠন সেই অধর ধরার অধর ফাঁদ। অধর, কারন আগে থেকে তৈরী থাকে না। প্রতিনিয়ত লড়াই/অনুশীলনের মাধ্যমে একে চিনে নিতে হয়, সৃষ্টি করতে হয়। ফাঁদ পাততে জানলে তিনি আনন্দ হয়ে ধরা দেন।

আলেক সাঁই।।


অরূপ রাহী । । ২০০৭


12
site design, development and maintain by jakaria hossain. for any inquary contact: c.jakariahossain@gmail.com