জনতাকে আশ্রয়হীন করা, লাঠিমারা, গুলি করা, শ্রম ও শ্রমের মুল্য থেকে বঞ্চিত করা, পরিহারসম্ভব ‘রোগ’ , ‘শোক’ এবং মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার, জীবনকে সীমিত করার, নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা – সবই ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের ক্ষমতার সীমার মধ্যে । জুলুমশাহী। এমন রাষ্ট্রগুলার সার্বভৌমত্ব চর্চা হয় পারস্পারিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে ‘সীমান্ত’র ‘দুইপাশে”/ বহুপাশের মানুষকেই বলি দিয়া কায়েমী গোষ্ঠীর স্বার্থে, জুলুমশাহীর স্বার্থে।বাংলাদেশের মত পরিচয়বাদী- সঙ্খ্যাগরিষ্ঠতাবাদী- ‘উত্তর-উপনিবেশিক’ ঔপনিবেশিক ক্ষমতা কাঠামো ও ঔপনিবেশিক সম্পর্কজালে আটকে থাকা রাষ্ট্রের সমাজ/জনগণ ঔপনিবেশিক আধুনিকতা আর প্রাক-ঔপনিবেশিক জীবনের ধারাবাহিকতার জটিল দ্বন্দ্ব-মোকাবেলা- সমরুপীকরণ ইত্যাদির ‘মাথানষ্ট’ অবস্থার মধ্য দিয়া যাইতেছি। তার নানা রকম উদাহরণ আমারা প্রতিক্ষনে তোইরী করতেছি, খেয়াল করলে পাইবেন। এহেন অবস্থায় আমাদের প্রথম কাজঃ নিজেদের এই সামাজিক-ঐতিহাসিক মুহুর্তে নিজেদেরকে সম্বিতে রাখা, হুঁশে রাখাঃ ‘আমি কি তাই জানলে সাধন সিদ্ধি হয়’। দ্বিতীয় কাজ এইটা ধ্যানে রাখা যে, রাষ্ট্র বর্তমান, কিন্তু মোক্ষ / চুড়ান্ত লক্ষ্য/ নির্বান/মুক্তি/ শান্তি-আনন্দের দেশ-দশা নয়, বিশেষ ঐতিহাসিক মুহুর্তের সমাজসংস্থানের দশা মাত্র। ঔপনিবেশিক রাষ্ট পশ্চিমা ঔপনিবেশিক আধুনিকতা( বর্ণবাদ- পুঁজিবাদ – পুরুষতন্ত্র)র সামান্য এক রূপ বিশেষ । এই রাষ্ট্র মডেল অপরিহার্য না । সমাজ- সংস্থানে রাষ্ট্র মডেল শেষ কথা না। এর বাইরে ভাবার এবং করার বহু দিগন্ত রইয়া গেছে । প্রশ্ন হইলো, ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র মডেল তো তবিয়তে বহাল, এখন কি করবো মোরা? উত্তর হইলোঃ প্রথমত, একালের মুক্তি সংগ্রামকে ঔপনিবেশিক আধুনিকতার প্রভাবাধীন সার্বভৌমত্ব মডেল, জাতি/পরিচয়বাদ, লিংগব্যবস্থা, সঙ্খ্যাগরিষ্ঠতাবাদ, সীমান্ত ও রাষ্ট্র মডেল , ক্ষমতার আলম্ব মডেলের বাইরে মানুষ , দ্বীন/ধর্ম/উপাসনা, সমাজ সংস্থান , দেশ , অঞ্চল ও দ্বীন- দুনিয়ার ভাবনা-অনুশীলন করতে হবে।সেসব ভাবনা-অনুশীলনের সাথে বর্তমান ঔপনিবেশিক সার্বভৌমত্ব মডেলের রাষ্ট্রের সম্পর্ক কেবলই রাষ্ট্রকে বিউপনিবেশিক গণতান্ত্রিক সমাজ-প্রক্রিয়ার অধীনে রাখার, সমাজ কল্যানে রাষ্ট্রকে ভূমিকা রাখতে বাধ্য করার এবং সংগ্রাম-সাধনার মাধ্যমে, বিকল্প সমাজ সংস্থান অনুশীলনের মাধ্যমে এই রাষ্ট্র মডেল এবং রাষ্ট্রব্যবস্থার বাইরে দেশ- দুনিয়াকে নিয়ে যাওয়া , সমাজের ইতিহাসে , দুনিয়ার ইতিহাসে ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র ও তার মাধ্যমে চলা জুলুমশাহীকে অতীত করে ফেলা, বর্তমানের জন্যে তাকে প্রভাবহীন করে ফেলা। তার জন্যে সমাজকে , জাত-পাত – শ্রেনী-লিংগ নির্বিশেষে সমাজের সব মানুষকে , সাধক- বিপ্লবী-বুজুর্গানে দ্বীন- আলেম-উলামা- পীর- ফকির-মাশায়েখকে সাম্য-মর্যাদা- ইনসাফের বিউপনিবেশিক , ‘নতুন আইনে’র ভাবনা- অনুশীলনের মাধ্যমে আমাদের নিজেদের এবং বিশ্ব সমাজের ইনসাফি রুপান্তরের কাজ শুরু করতে হবে এখনই।

আলেক সাঁই ।